ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে ধূমপানমুক্ত করতে আদেশ জারি

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে ধূমপানমুক্ত করতে আদেশ জারি

ছবি সংগৃহীত

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে আনুষ্ঠানিক অফিস আদেশ জারি করেছেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) আবদুল লতিফ খান। এই উদ্যোগের মাধ্যমে গাজীপুরের সকল বিভাগ, শাখা, দপ্তর ও আঞ্চলিক কার্যালয় ধূমপানমুক্ত হবে।

আজ রবিবার দুপুরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি এই আদেশ জারি করেন। ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পুওর (ডর্‌প)-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সেমিনারের প্রধান অতিথি আবদুল লতিফ খান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য গাজীপুরকে একটি সম্পূর্ণ ধূমপানমুক্ত শহরে রূপান্তরিত করা। এই উদ্যোগ শুধু স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্যও প্রয়োজন।” তিনি সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে অবিলম্বে আদেশ কার্যকরের নির্দেশ দেন।

সেমিনারের বিশেষ অতিথি গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, “তরুণরা যেন ধূমপানের পথে না যায়, সেজন্য সচেতনতামূলক প্রচার আরও বাড়াতে হবে। গণমাধ্যমে আমাদের এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।”

অনুষ্ঠানে ডর্‌প-এর তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রুবিনা ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধে তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (FCTC)-এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী তুলে ধরেন।

সেগুলো হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, তামাকপণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) রুবেল মাহমুদ।

এছাড়াও সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা তামাকের স্বাস্থ্যঝুঁকি, তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রস্তাবিত সংশোধনী আইন বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেন তারা।

উল্লেখ্য, ডর্‌প বিগত ১৯৮৭ সাল থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর সাথে জড়িত এবং মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রবর্তনকারী সংস্থা হিসাবে সমধিক পরিচিত। এরই ধারাবাহিকতায় ডর্‌প বর্তমানে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ এবং তামাক কর ও মূল্য বৃদ্ধি বিষয়ে কাজ করছে এবং সরকারের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

আশিক

×