ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২

উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা শহর নানা রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে

পাবর্ত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৪:০৭, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা শহর নানা রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে

ছ‌বি: সংগৃহীত

মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইং উৎসবে বর্ষ বিদায় ও বরণ ঘিরে বর্ণিল অনুষ্ঠানমালায় রঙিন হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়ি। রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ মাঠে মারমা ঐক্য পরিষদের আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়া। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার ও পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল ও বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চাথোয়াই চৌধুরী। শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মহিলা কলেজ এলাকায় সাংগ্রাইং উৎসব মাঠ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।

আয়োজনে ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ধ খেলা, মৈত্রী স্নান, মৈত্রী জল বর্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ। ঐতিহ্যবাহী পোষাকে হাজারো মারমা সম্প্রদায়ের নর-নারী জনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তা অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান সর্বজনিন অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। 

পরে সেখানে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ধ খেলা, মৈত্রী স্নান, মৈত্রী জল বর্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। 

বর্ষ বিদায় ও বর্ষ বরণের দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে পুরো জেলার হাজারো মারমা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ অংশ নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠে। এমন উৎসবে অংশ নিতে পেরে খুশি মারমা সম্প্রদায়ের মানুষ।

অপর দিকে আজ চাকমাদের বর্ষ বিদায় বা মূল বিজু উৎসব উপলক্ষে ঘরে ঘরে চলছে অন্তত ৩২ ধরনের সবজি দিয়ে পাচন রান্না ও রকমারি খাবার দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারি বৈস। ঘর সাজাতে ব্যস্থ সময় পার করছে ত্রিপুরা সম্প্রদায়। আগামীকাল সোমবার ১৪ এপ্রিল মারমা সংসদের উদ্যোগে হবে সাংগ্রাইং উৎসবে ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা জলোৎসবে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করবে। মারমা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল দুঃখ-গ্লানি ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে।

জেলা প্রশাসক ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকারের মতে, পাহাড়ের এবারের উৎসব গোটা বাংলাদেশের জন্য এটি অনুকরণীয়। এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে উঠবে এবং সহবস্থান তৈরি হবে। এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের প্রতিচ্ছবি। আমরা যে অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই এই ধরনের উৎসব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

বৈসাবী এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য হলেও এখন সার্বজমিন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্যে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি আরো সু-দৃঢ় হোক এ প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিসহ সকলের।

আবীর

×