
ছবিঃ সংগৃহীত
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হলো প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্টের ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। এ কর্মসূচিকে ঘিরে দেশটিভির সাংবাদিক হাসান মাহমুদ জানান, “আজকের কর্মসূচি সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। আমরা দেখেছি, খুব সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসেছেন—বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার এবং আশেপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ এসে উপস্থিত হন।”
তিনি বলেন, “এই কর্মসূচির একটি বিশেষ দিক ছিল—এটি কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে আয়োজিত হয়নি। তবে প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সাধারণ মানুষের মতোই উপস্থিত ছিলেন। যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী হলেও ব্যানার ছাড়া এখানে এসেছেন।”
এই কর্মসূচিতে ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন মতাদর্শের আলেমদেরও উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। হাসান মাহমুদ বলেন, “সাধারণত আলেমরা আকিদা ও চিন্তাধারায় বিভক্ত থাকেন, একেকজন একেক মত দেন। কিন্তু আজকে আমরা দেখেছি, সব মতাদর্শের আলেমরা একত্রিত হয়েছেন। একইভাবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং বামপন্থী অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারাও।”
সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ, ইলিয়াস কাঞ্চনের মতো সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন। তিনি আরও বলেন, “এখানে মুসলিমদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের মানুষও এসেছেন। কারণ, গাজায় শিশু ও নারীদের ওপর বর্বর হত্যাকাণ্ড সারা বিশ্বের মানুষকে নাড়া দিয়েছে। এই নিষ্ঠুরতা সাধারণ মানুষের আবেগে প্রবল প্রভাব ফেলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভৎস ছবিগুলো দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এসব দৃশ্য দেখে কেউই স্বাভাবিক থাকতে পারেন না।”
হাসান মাহমুদের ভাষ্যে, “এই কর্মসূচির মাধ্যমে সরাসরি যুদ্ধ থামানো সম্ভব না হলেও, জাতিসংঘ ও ওআইসিভুক্ত দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ সৃষ্টির একটি বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, যেখানে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গণপ্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। যেন ভবিষ্যতে এমন গণহত্যা আর না ঘটে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ইসরাইল যেভাবে পুরো প্যালেস্টাইনকে কুক্ষিগত করে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। রাষ্ট্রকে স্থিতিশীল রাখার নামে তারা ক্রমশ ভূখণ্ড দখল করে নিচ্ছে, আর ভিন্নমতাবলম্বী মানুষদের বিতাড়ন করছে। গাজা তো ছিলই এক ধরনের উদ্বাস্তু নগরী, সেখানে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে জায়গাটি একেবারে ফাঁকা করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি বিশ্ববাসী কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।”
সাংবাদিক হাসান মাহমুদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, “বিশ্বের যেভাবে সলিডারিটি দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এই কর্মসূচির চিত্র উঠে আসছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।”
মারিয়া