ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো বাঙালির অস্তিত্ব বুঝতে পারছেন না: আশরাফ কায়সার

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ১২ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২২:৪৫, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো বাঙালির অস্তিত্ব বুঝতে পারছেন না: আশরাফ কায়সার

ছবিঃ সংগৃহীত

সাংবাদিক ও বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার সম্প্রতি দেশ টিভির এক সাক্ষাৎকারে নববর্ষ উদযাপনে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, “ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো বাঙালির অস্তিত্ব বুঝতে পারছেন না।”

অনুষ্ঠানের উপস্থাপক জনাব আশরাফ কায়সারকে বলেন, “দরজায় কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ এবং গোটা বাঙালি জাতি কিন্তু ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলা নববর্ষ বরাবরই উদযাপন করে এসেছে। পহেলা বৈশাখ উদযাপনে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে কোনো কিছু করা যাবে না।’ ‘মঙ্গল’ শব্দ ও ধারণা অবশ্যই বাদ দিতে হবে।” এই বক্তব্যকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

সাংবাদিক ও বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার বলেন, এখনকার ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বা ধর্ম নিয়ে যারা সামাজিকভাবে সোচ্চার, তারা আমাদের বাঙালি জাতির অস্তিত্বটি বুঝতে পারছেন না। আমাদের একটি নৃতাত্ত্বিক অস্তিত্ব রয়েছে হাজার বছরের, এবং তারপর ‘বাংলাদেশি’ বলে আমাদের একটি ‘বাংলাদেশ’ নামক ভূখণ্ড হয়েছে, এবং আমাদের একটি ধর্মীয় পরিচয় রয়েছে। এই প্রশ্নটি অনেক আগেই মীমাংসিত যে আপনি ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে সমাজ নির্ধারণ করবেন, রাজনীতি নির্ধারণ করবেন, নাকি সেটি ব্যক্তিগত চর্চার জায়গা হয়ে থাকবে।

আশরাফ কায়সার মনে করেন, একটি গণতান্ত্রিক আধুনিক রাষ্ট্রে পহেলা বৈশাখ উদযাপনে মঙ্গল শোভাযাত্রা হলো ব্যক্তিগত চর্চার বিষয়। কাজেই আমরা নৃতাত্ত্বিকভাবে আমাদের সব ধর্ম, মত, পথকে সেলিব্রেট করতে পারি। আমরা চাকমা, মারমা, বাঙালিদের নিয়ে একসাথে উৎসব করতে পারি। তাদের নববর্ষকে সেলিব্রেট করতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের অনেকেরই ধর্মের ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু উৎসব একসাথে পালন করার ব্যাপারে কী সমস্যা রয়েছে? সম্প্রীতির বাংলাদেশে আমরা বরাবরই কিন্তু তাই দেখেছি। এখন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো যে রাজনীতির কথা বলেন, আমাদের নিশ্চিতভাবে অনেক মানুষ আছেন, যারা তাদের রাজনীতি দেখলে ভয় পান, তাদেরকে ভোট দেন না এবং তাদেরকে মনে করেন পশ্চাৎপদ বাংলাদেশের সহযোগী। কাজেই, ওই সমালোচনাটি কি তারা পজিটিভলি নিতে পারেন? নিতে পারেন না।

মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা আমাদের চারুকলার একটি ঐতিহ্য এবং এটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ। এর মাধ্যমে আমরা বাংলা-বাঙালি হিসেবে আমাদের হাজার বছরের সুন্দর চিন্তা এবং অমঙ্গল থেকে বেরিয়ে মঙ্গলের ভবিষ্যতের দিকে যাওয়ার যে চেষ্টা, এটিকে বাধা দেওয়া বা এটিকে নিন্দা করা বা সমালোচনা করা হলো অনধিকার চর্চা।

সূত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=O7RmNCiT0-I

ইমরান

×