ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

আজহারীর স্লোগানে প্রকম্পিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

প্রকাশিত: ২২:৪০, ১২ এপ্রিল ২০২৫

আজহারীর স্লোগানে প্রকম্পিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক মহাসমাবেশে আবেগঘন ভাষণে জনতার হৃদয় নাড়িয়ে দিলেন দেশের প্রখ্যাত ইসলামিক চিন্তাবিদ ও বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকাল পৌনে চারটার দিকে মঞ্চে বক্তব্য শুরু করেন তিনি। বক্তব্যের শুরুতেই আবেগী কণ্ঠে বলেন, “আমাকে অনুরোধ করা হয়েছে জনসমুদ্রকে শান্ত রাখার। কিন্তু আমি জানি না— আপনারা শান্ত থাকবেন, নাকি হৃদয়ের আগুনে জেগে উঠবেন!”

তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেক বাংলাদেশির হৃদয়ে একটি ফিলিস্তিন, একটি গাজা, একটি আল-আকসা বাস করে।” তার এমন কথায় জনতা একাত্ম হয়ে চিৎকার করে জবাব দেয়, “আছে, আছে!”

আজহারী স্মরণ করিয়ে দেন, “ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল করতে গিয়ে আমরা লাঠি খেয়েছি, ধাক্কা সহ্য করেছি। তবু থেমে যাইনি। কারণ, আজকের এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে—বাংলাদেশের হৃদয়ে ফিলিস্তিন বেঁচে আছে।”

সমাবেশে উত্তাল আবেগে ভর করে ড. আজহারী একের পর এক স্লোগানে জনতাকে উদ্বুদ্ধ করেন:
“নারায়ে তাকবীর!” — “আল্লাহু আকবার!”
“ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ!”
“আল কুদস জিন্দাবাদ!”

এরপর ইংরেজিতে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করতে তিনি বলেন—“Say it with me—Free Free Palestine! Free Free Al-Quds!”

জাতিসংঘের নিরব ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আমার ভাইরা শহীদ হচ্ছে, আর জাতিসংঘ চুপ করে বসে আছে? এই নীরবতা মানবতার প্রতি অবমাননা! আমরা জবাব চাই, আন্তর্জাতিক বিবেকের জবাব চাই!”

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “আমরা এখানে শুধু বক্তব্য দিতে আসিনি, আমরা এসেছি বার্তা দিতে—এই জাতি এখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঘুমিয়ে নেই। ইনশাআল্লাহ, একদিন ফিলিস্তিন স্বাধীন হবেই।”

তার আবেগী বক্তব্য ও স্লোগান মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তখন পরিণত হয় প্রতিবাদের গগনবিদারী চিত্রে।

এই মহাসমাবেশে ড. আজহারীর পাশে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামিক বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ। দল-মত নির্বিশেষে লাখো মুসলিমের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিণত হয় এক অভূতপূর্ব সংহতির মিছিলে।

‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত গড়ে তোলা।

এম.কে.

×