ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ঢাকা যেন এক টুকরো ফি লি স্তি ন!

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ১২ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৮, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা যেন এক টুকরো ফি লি স্তি ন!

ছবি: সংগৃহীত

আজকের ঢাকা যেন হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনের প্রতিচ্ছবি। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা আর বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে রাজধানী। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং আশপাশের এলাকাগুলো পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে। একটাই দাবি— গণহত্যা বন্ধ করো, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করো।

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক এক বিশাল গণজমায়েত। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা হাজারো মানুষ, যাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে একটাই স্লোগান— “ফিলিস্তিন মুক্ত করো, গণহত্যা বন্ধ করো!”

সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল সহকারে মানুষ আসতে শুরু করেন উদ্যানে। শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেত, টিএসসি, পলাশীসহ আশপাশের এলাকার রাস্তাগুলোয় একের পর এক মিছিল ঢুকে পড়ে মূল সমাবেশস্থলে। অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা এবং নানান প্রতিবাদী স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড। প্ল্যাকার্ডগুলোর মাঝে লেখা ছিল— “গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব?”, “ফিলিস্তিন মুক্ত করো”, “ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান চাই”।

সমাবেশস্থলে দেখা যায় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ: শিক্ষার্থী, শিক্ষক, রাজনীতিক, ইসলামি বক্তা, মানবাধিকারকর্মী এবং সংস্কৃতিকর্মীরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা।

সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ অভিনব পন্থায় প্রতিবাদ জানান—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি বা মুখোশ বহন করে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে এই গণহত্যার সহযোগীদের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করে। অনেকেই রক্তাক্ত (প্রতীকী) পোশাক পরে অংশগ্রহণ করেন, যা গাজার পরিস্থিতিকে দৃশ্যমান করে তোলে।

একজন বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা এখানে এসেছি নিরস্ত্র মানুষের উপর এই বর্বর আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাতে। মানবতা আজ রক্তাক্ত, বিশ্ব নেতৃত্ব কেন চুপ করে বসে আছে?”

আয়োজকরা জানান, বিকেল পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি, যেখানে থাকবে সংহতির বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও বিশেষ দোয়া।

এই গণজমায়েতটি আজ ঢাকায় ফিলিস্তিনের পক্ষে সবচেয়ে বৃহৎ জনসমাবেশগুলোর একটি হিসেবে পরিণত হয়, যেখানে মানুষ তাদের হৃদয়ের গভীরতা থেকে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করে।

 

 

ফারুক

×