
ছবি: সংগৃহীত।
গাজায় চলমান বর্বর হত্যাকাণ্ড ও দমন-পীড়নের প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশে আজ ১২ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘মার্চ ফর গাজা’। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচি বিকেল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এতে দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ এক কাতারে এসে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
কর্মসূচির সভাপতিত্ব করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক। আয়োজক ও সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এটি ঢাকার রাজপথে ফিলিস্তিনের পক্ষে আয়োজিত সবচেয়ে বড় জনসমাবেশে রূপ নেবে।
৫টি পয়েন্ট থেকে শুরু হবে মার্চ
আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর পাঁচটি নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে এই মার্চ শুরু হবে। পথ নির্দেশনা অনুযায়ী,
১. বাংলামোটর পয়েন্ট: বাংলামোটর থেকে শাহবাগ হয়ে রমনা গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ।
২. কাকরাইল মোড়: কাকরাইল থেকে মৎস্য ভবন হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশ।
৩. জিরো পয়েন্ট: জিরো পয়েন্ট থেকে দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি গেট দিয়ে প্রবেশ।
৪. বকশীবাজার মোড়: শহীদ মিনার হয়ে টিএসসি গেট দিয়ে উদ্যানে প্রবেশ।
৫. নীলক্ষেত মোড়: ভিসি চত্বর হয়ে টিএসসি গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অংশগ্রহণ।
বিশেষভাবে জানানো হয়েছে, এদিন টিএসসি মেট্রো স্টেশন বন্ধ থাকবে। তবে পরীক্ষার্থীদের জন্য সব রাস্তা উন্মুক্ত থাকবে এবং তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
আয়োজকদের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারীদের কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে:
প্রত্যেকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পানি, ছাতা, মাস্ক সঙ্গে রাখবেন। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখবেন এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। রাজনৈতিক প্রতীকবিহীন, সৃজনশীল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কেবল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহনের মাধ্যমে সংহতি প্রকাশে অংশ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আয়োজক সংগঠনের ফেসবুক পেজে দেশি-বিদেশি বিশিষ্টজনদের ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন—দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা, তাইজুল ইসলাম, ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম আবরার, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম, অভিনেতা তামিম মৃধা এবং টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক।
বিশেষভাবে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর ফেসবুক পেজে নিজের ও আরও ১৪ জন বিশিষ্টজনের ভিডিও বার্তা পোস্ট করে লিখেছেন, “আগামী শনিবার ফিলিস্তিনের জন্য সবচেয়ে বড় মার্চ হবে ঢাকার রাজপথে। স্লোগানে-মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠবে শাহবাগ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ।”
শায়খ আহমাদুল্লাহ, মিজানুর রহমান আজহারী এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে এই কর্মসূচির প্রচারণা চালিয়েছেন। এক ভিডিও বার্তায় আজহারী বলেন, “১২ এপ্রিল শাহবাগ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত এই মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।”
আয়োজকরা বলছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম সব রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিতে যাচ্ছেন। এটি নিপীড়িত জাতির পাশে দাঁড়ানোর এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে।
সায়মা ইসলাম