
ছবি: সংগৃহীত
২০২৩ সালে বিদ্যালয়ে আসার পথে ইজিবাইক দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও দুইটি চোখ হারান সানজিদা আক্তার রুবিনা (১৮)। তখন পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। পরে শিক্ষক ও প্রতিবেশীদের সাহসে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সাহস পায় সে। চোখে দেখতে না পেলেও হার মানতে রাজি নয় রুবিনা। তাইতো সকল প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে এবার নান্দাইল উপজেলার মুশুলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে সে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আর তার হয়ে শ্রুতিলিখনের কাজ করছে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া রাইফা ইসলাম (১৬)।
বৃহস্পতিবার মুশুলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থিত কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ১০৫ নাম্বার কক্ষে অনেকের সাথে বেঞ্চে বসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রুবিনা। প্রশ্নের উত্তরে মৃদু কন্ঠে রুবিনা বলে দিচ্ছে আর তা শুনে খাতায় লিখছে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া রাইফা ইসলাম। এসময় রাইফা জানায়, শ্রুতিলিখনের কাজ করতে পেরে বেশ আনন্দ লাগছে। সে মুশুলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রুবিনা আপু বলে দেন আর আমি খাতায় লিখি। আপু এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করলে আমার খুব ভালো লাগবে।"
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রুবিনা বলেন, "বিদ্যালয়ে আসার পথে যে দুর্ঘটনায় আমি চোখ হারিয়েছি, সে সময় একজন মারা যায়। পরিবার, প্রতিবেশী এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় পড়ালেখা চালিয়ে যেতে সাহস পাই। চোখ হারালেও মনের জোর হারাইনি।"
মুশুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাজাহান ভূঁইয়া বলেন, "রুবিনা আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সে দুটো চোখ হারিয়েছে। পরে তার পড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করলে বোর্ড একজন শ্রুতিলিখনের অনুমতি দেয়।"
রুবিনা যে কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে সেই কেন্দ্রের সহকারি কেন্দ্র সুপার এবং মুশুলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, "রুবিনার জন্য তার বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী রাইফাকে শ্রুতিলিখনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বোর্ড রুবিনার জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ দিয়েছে।" নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা সাত্তার বলেন, "রুবিনা যে কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে সকালে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। রুবিনা যাতে স্বাচ্ছন্দে পরীক্ষায় দিতে পারে সেজন্য সবাইকে সহযোগিতা করতে বলে এসেছি।"
আবীর