
ছবি: সংগৃহীত
পহেলা বৈশাখের অন্যতম প্রতীক ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম ও ধারণার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেছেন, নববর্ষ উদযাপন করা গেলেও ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে কোনো আয়োজন ইসলামসম্মত নয়।
বুধবার ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নববর্ষের দিন মানুষ শালীনতা বজায় রেখে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকে অনুষ্ঠান করতে পারে। কিন্তু যদি যাত্রার মাধ্যমে মঙ্গল হবে—এমন বিশ্বাস পোষণ করা হয়, তাহলে তা গুনাহের পথে নিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “‘মঙ্গল’ শব্দ এবং এর অন্তর্নিহিত বিশ্বাস ইসলামবিরোধী। তাই নববর্ষ উদযাপনের আয়োজনে এ ধরনের নাম ও ধারণা পরিহার করতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম সমাজের স্বার্থে। সেই বাস্তবতা মাথায় রেখে নববর্ষ উদযাপন থেকে ‘মঙ্গল’ শব্দ ও মূর্তিসহ ইসলাম বিরোধী প্রতীক বাদ দিতে হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “পতিত ফ্যাসিবাদের চাপিয়ে দেওয়া সাংস্কৃতিক প্রতীক ও হিন্দুত্ববাদী ধারণা নববর্ষের আয়োজনে প্রবেশ করানো হয়েছে, যা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি।” তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ ধরনের প্রতীক ও ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।
বাংলা নববর্ষের ইতিহাস তুলে ধরে ফয়জুল করীম বলেন, “পহেলা বৈশাখ এই অঞ্চলের কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পারিবারিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। বাদশাহ আকবর ইসলামী হিজরি পঞ্জিকার সঙ্গে সৌর পঞ্জিকাকে সমন্বয় করে বাংলা সনের প্রবর্তন করেছিলেন। তাই এ সনের প্রেক্ষাপটে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে, তবে ইসলামবিরোধী কিছু নয়।”
এর আগে, ২৩ মার্চ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলে তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
তবে পরদিন তিনি বলেন, নাম পরিবর্তনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এবং তার বক্তব্যকে ‘মিসকোট’ করা হয়েছে। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলামও জানান, আয়োজনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি, বিভিন্ন কমিটির আলোচনা সাপেক্ষেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আসিফ