
ছবি: সংগৃহীত
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি জনগণের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তবে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত গড়েছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান খান। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র এক বছরে সততা, নিষ্ঠা ও মানবিক নেতৃত্বের মাধ্যমে বদলে দিয়েছেন গোটা উপজেলা প্রশাসনের চিত্র। অর্জন করেছেন এলাকাবাসীর ভালোবাসা, বিশ্বাস আর অকুণ্ঠ প্রশংসা।
২০২৪ সালের ২৭ মার্চ রায়পুরে ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় তার নিরলস পথচলা। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরে ফিরিয়ে আনেন শৃঙ্খলা, গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা। তার নেতৃত্বে কমেছে জনভোগান্তি, বেড়েছে সেবার মান। মানুষ পাচ্ছে দ্রুত এবং কার্যকর সেবা।
উপজেলার প্রত্যন্ত ইউনিয়ন হোক কিংবা পৌর এলাকার কোনো গলি - ইউএনও ইমরান খানের উপস্থিতি সর্বত্র। ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে, পারিবারিক নির্যাতন - যে কোনো অন্যায় বা অপরাধে তিনি সরাসরি ব্যবস্থা নেন। ঝটিকা পরিদর্শনে ফিরেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিততা। স্কুলে বিতরণ করেছেন চিকিৎসা উপকরণ, দিয়েছেন মানসম্মত শিক্ষা উপকরণের সহায়তা।
করোনা-পরবর্তী সংকটে ও সাম্প্রতিক বন্যায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তার মানবিক পদক্ষেপ ব্যাপক প্রশংসিত হয়। খাদ্যসামগ্রী, শীতবস্ত্র ও ওষুধ পৌঁছে দেন দরিদ্র পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে।
তার কাজের স্বীকৃতি দিতে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংগঠন তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেছে। রায়পুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম আর সুমন বলেন - "তিনি শুধু প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন, একজন মানবিক নেতা।" পৌর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম আলমাস জানান-
"মানুষ তাকে নিজের একজন মনে করে। অফিসের সময় না জেনে ইউএনওকে ফোন করে সমস্যার কথা বলছে মানুষ - এটাই তার প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ।"
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান খান বলেন "রায়পুরকে একটি স্মার্ট, আধুনিক ও নাগরিকবান্ধব উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতেই আমার প্রতিটি উদ্যোগ। এই অর্জন একার নয়- জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সম্মিলিত প্রয়াসেরই ফল।"
ইউএনওর ১ বছরে রায়পুরে উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা, শতভাগ ই-নথি বাস্তবায়ন, অনলাইন অভিযোগ নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি, শিক্ষা খাতে অগ্রগতি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঝটিকা পরিদর্শন, শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, স্কুলে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ, বন্যাকালে মানবিক সহায়তা প্রদান, খাদ্য, ওষুধ, শীতবস্ত্র বিতরণ, বাল্যবিয়ে রোধে সফল টাস্কফোর্স গঠন, ইভটিজিং ও পারিবারিক সহিংসতায় হস্তক্ষেপ, রাস্তা, কালভার্ট ও সরকারি স্থাপনা নির্মান, সময়মতো কাজ সম্পন্ন করে সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার।
প্রতিবেদকের সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, “সরকারের দায়িত্ব শুধু অফিসে বসে ফাইল দেখা নয়, জনগণের কাছে যাওয়া- তাদের কথা শোনা এবং পাশে দাঁড়ানো।”
মেহেদী হাসান