ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

স্টারলিংক থেকে কী সুবিধা পাবে বাংলাদেশ; সংযোগের খরচ দেশ ভেদে ভিন্ন কেন?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ১০ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১১:১৯, ১০ এপ্রিল ২০২৫

স্টারলিংক থেকে কী সুবিধা পাবে বাংলাদেশ; সংযোগের খরচ দেশ ভেদে ভিন্ন কেন?

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো স্টারলিংক এর সেবা। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা ব্যবহার করতে পারছেন এ সেবা। সেখানে স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহার করে সম্মেলনের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

গত ২৯ মার্চ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ স্টারলিংকের বিনিয়োগ নিবন্ধন দেয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করতে পারে। অবশ্য সেই সময়ের আগেই চালু হলো স্টারলিংক।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের সাথে ভিডিও কলে স্টারলিংক বাংলাদেশে আনা সম্পর্কে আলোচনা করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে স্টারলিংকের পরিষেবা চালুর উদ্যোগ আরও গতিশীল হয়। এর পর ঢাকায় কয়েকবার পরীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা মনে করছেন বাংলাদেশে তাদের পরীক্ষামূলক যাত্রার মাধ্যমে এক নতুন যুগের সূচনা হল। কারণ স্পেস এক্স (SpaceX) এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক ইতোমধ্যে বহু দেশে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে উচ্চ গতির সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সে অনুযায়ী স্টারলিংক চালু হলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সহজলোভ্য হবে এবং কমবে শহর ও গ্রামের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য। 

এদিকে ওয়েবসাইট অনুযায়ী বাসা-বাড়িতে স্টারলিংকের সেবা নিতে কিছু সরঞ্জাম কিনতে হবে। সেই স্টারলিংক কিট এর মূল্য ৩৪৯ থেকে ৫৯৯ ডলার পর্যন্ত। যা বাংলাদেশি টাকায় ৪৩ থেকে ৭৪ হাজার টাকা। এছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের জন্য মাসিক সর্বনিম্ন ফি ১২০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। তবে কর্পোরেট গ্রাহকদের জন্য এর দাম ও মাসিক ফি দ্বিগুণেরও বেশি। দেশ ভেদে আবার এর খরচে ভিন্নতা রয়েছে। 


বিভিন্ন দেশে খরচ ভিন্ন কেন?

স্টারলিংক ব্যবহারের খরচ একেক দেশে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের একেক অঙ্গরাজ্যেও একেক রকম। মূলত স্টারলিংক বিভিন্ন ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সেবা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে রেসিডেনশিয়াল প্যাকেজে প্রতি মাসে ১২০ ডলারে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এখানে যন্ত্রপাতির দাম ৩৪৯ ডলার।
ব্যবসা ও বিশেষায়িত কাজে ইন্টারনেট সেবা বিশেষ দামে দিয়ে থাকে স্টারলিংক। সমুদ্রে ২২০ মেগাবাইট গতির ইন্টারনেট নিতে চাইলে প্রতি মাসে ২৫০ ডলার ও যন্ত্রপাতি খরচ দিতে হবে। অনলাইনে অর্ডার করার পরে স্টারলিংক স্ট্যান্ডার্ড বক্সে স্টারলিংক অ্যান্টেনা, স্ট্যান্ড, জেন থ্রি রাউটার, স্টারলিংক কেবল, এসি কেবল ও পাওয়ার সাপ্লাই থাকে। সব মিলিয়ে ওজন হয় ৩.২ কিলোগ্রাম। স্টারলিংকের ইন্টারনেট গতি বেশ ভালো। সাধারণ ডাউনলোডের গতি ৯৭ এমবিপিএসের কাছাকাছি। স্টারলিংকের ডেটা লেটেন্সি উল্লেখযোগ্যভাবে কম, প্রায় ২৯.৮ মিলিসেকেন্ড। এই গতিতে ভিডিও কনফারেন্সিং ও অনলাইন গেমিংয়ের মতো রিয়েল-টাইম অ্যাপ্লিকেশন দারুণভাবে ব্যবহার করা যায়।

স্টারলিংক সংযোগ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যন্ত্রের জন্য ৫৯৯ ডলার দিতে হয়। স্টারলিংক মেরিটাইমের হার্ডওয়্যার খরচ পড়ে ২৫০০ ডলার। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, স্টারলিংক রাউটার একসঙ্গে ২৫৪ ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারেন। যদিও ৫০টির কম যন্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়। স্টারলিংক ফোনে গ্রাহকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয় না। স্টারলিংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সমস্যা সমাধান বা কাস্টমার সাপোর্টে সরাসরি যোগাযোগ করা যাবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যুক্তরাষ্ট্রের মতোই প্রায় একই দামে সেবা প্রদান করে স্টারলিংক।

আরো পড়ুন  

×