
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরকে ঘিরে একটি মুক্ত বাণিজ্য এলাকা (ফ্রি ট্রেড জোন) প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। তিনি জানান, এ লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিখ্যাত কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা হচ্ছে। ডিপি ওয়ার্ল্ড বর্তমানে জেবেল আলি বন্দর ও ফ্রি ট্রেড জোনের সফল মডেল পরিচালনা করছে, যা সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতিতে ২৫ শতাংশ অবদান রাখে।
বিডা চেয়ারম্যান জানান, ডিপি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েমের সঙ্গে সম্প্রতি এক বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে জেবেল আলি বন্দরের আদলে মাতারবাড়ীতেও একটি বিশ্বমানের ফ্রি ট্রেড জোন গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে শীঘ্রই একটি বাংলাদেশি টিম জেবেল আলি বন্দর পরিদর্শনে যাবে বলে তিনি জানান। আশিক উল্লেখ করেন, "ডিপি ওয়ার্ল্ডের কারিগরি জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমরা মহেশখালীতে একটি আধুনিক ও কার্যকর মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তুলতে চাই।"
বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিডা চেয়ারম্যান জানান, প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং এনবিআর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এসব বৈঠকে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে স্প্যানিশ ফ্যাশন ব্র্যান্ড ইন্ডিটেক্স (জারা গ্রুপ) এবং সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাফার্জ হোলসিমের মতো বড় কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।
বিনিয়োগ সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতি। তিনি তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি বিশেষ সেশনে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া যুক্তরাজ্যের ট্রেড টিম বাংলাদেশের ভিশন ২০৩৫ বাস্তবায়নে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিডা চেয়ারম্যান জানান, ইন্ডিটেক্সের প্রধান নির্বাহী বাংলাদেশের বাজারকে "অবিশ্বাস্য রকমের সম্ভাবনাময়" বলে অভিহিত করেছেন।
বিডা চেয়ারম্যান জানান, বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন পরামর্শ ও চাহিদা বিশ্লেষণ করে সরকার নীতিগত সহায়তা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেবে। মাতারবাড়ী বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা এই মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
আঁখি