ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ভারত দিয়ে ভুটান-নেপালে পণ্য পাঠাতে পারবে না বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ১০ এপ্রিল ২০২৫

ভারত দিয়ে ভুটান-নেপালে পণ্য পাঠাতে পারবে না বাংলাদেশ

ছবিঃ সংগৃহীত

পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত সরকার। গতকাল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই সুবিধা বাতিল করে নোটিশ জারি করে দেশটির সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডিরেক্ট অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি)। এর ফলে এখন থেকে ভারতের বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে না বাংলাদেশ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর এবং বিমানবন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য এই সুবিধা পেত বাংলাদেশ। ২০২০ সালের জুনে বাংলাদেশকে পণ্য রপ্তানির এই সুবিধা দিয়েছিল ভারত। এবার সেই সুবিধা বাতিল করায় ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানিতে সংকটে পড়বে বাংলাদেশ।

৮ এপ্রিল ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডিরেক্ট অ্যান্ড কাস্টমসের (সিবিআইসি) জারি করা নোটিশে বলা হয়েছে, ‘২০২০ সালের ২৯ জুন জারি করা সার্কুলার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে আগের সার্কুলারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।’

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এমন এক সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধা বাতিল করল, যার কয়েক দিন আগে ভারত-বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা।

এর আগে সম্প্রতি চীন সফর করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওই সময় তিনি ভারতের চিকেনস নেক নিয়ে কথা বলেন। এর কয়েক দিন না যেতেই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন এই ঘোষণা এল ভারতের পক্ষ থেকে। 

ভারতের সাবেক বাণিজ্য কর্মকর্তা এবং জিটিআরআইয়ের প্রধান অজয় ​​শ্রীবাস্তব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলছেন, ভারত ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থকে সমর্থন করে আসছে এবং গত দুই দশক ধরে বিশাল ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পণ্যগুলোতে (মদ ও সিগারেট বাদে) একমুখী ও শূন্য-শুল্ক প্রবেশাধিকার প্রদান করেছে।

শ্রীবাস্তব বলেন, ‘তবে চীনের সহায়তায় চিকেনস নেক এলাকার কাছে একটি কৌশলগত ঘাঁটি স্থাপনের বাংলাদেশের পরিকল্পনা নতুন এই পদক্ষেপকে উৎসাহিত করতে পারে। ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের কাছে লালমনিরহাটে বিমানঘাঁটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বাংলাদেশ চীনা বিনিয়োগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।’

এই সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের রপ্তানি ব্যয় বাড়বে। লজিস্টিক যাবে দেরিতে। আর পুরো বিষয়টিই এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। এ ছাড়া নেপাল ও ভুটান বাংলাদেশে সীমিত ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে। কারণ এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য ব্যাহত হবে।

রিফাত

আরো পড়ুন  

×