
ছবিঃ সংগৃহীত
এ যেন হাত মিলিয়ে পিছন দিক থেকে ছুরি মারা! এমন অনেক গল্প আমার আপনার কিংবা আমাদের জানা, তবে গল্পের বাইরে এসে এই কথাগুলোর বাস্তব প্রমাণ যে হতে পারে তা যেন দেখিয়ে দিল বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত। কদিন আগেই বিমস্টেক সম্মেলনের পর দুদেশের সম্পর্ক নতুন পথে এগবে বলে আশা করা হচ্ছিল, তবে সে আশায় যেন গুড়ে বালি ঢেলে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের জন্য ভারতের পণ্যরপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। ভারতের এমন কাজকে এক কথায় বলা চলে বেইমানির সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতের এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল ব্যাপারটি আসলেই বা কী?
মূলত ভারতীয় স্থল শিল্প স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া এই দীর্ঘদিনের সুবিধাটি মূলত বাতিল করেছে ভারত। ৮ এপ্রিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের জন্য এই সুবিধা বাতিল করেছে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল ভারত?
মূলত ভারতের পোশাক খাতের রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। হাস্যকর হলেও সত্য যে, তাদের অভিযোগ ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ টি ট্রাক দিল্লি বিমানবন্দর কার্গো টার্মিনালে প্রবেশ করে, যার ফলে ভারতীয় পণ্যের রপ্তানি ব্যহত হচ্ছে। বিমান সংস্থাগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে ও কার্গো প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে, যার ফলে ভারতীয় পণ্যের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
এমন সিদ্ধান্তের পর ভারতের আদৌ কতটা উপকার হলো?
বিশ্ববাণিজ্যে পোশাক খাতে ভারতের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দী বাংলাদেশ। ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের কার্গো পরিবহনে অতিরিক্ত সক্ষমতা থাকবে। অতীতে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে বন্দর ও বিমানবন্দরে স্থান কম পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করতেন।
ভারতের এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের উপর কতটা প্রভাব পড়তে পারে?
ভারতীয় বিশ্লেষকরা যদিও বলছেন, এই সুবিধা প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম ব্যহত হবে। তারা বলছেন, এই সুবিধা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশী রপ্তানিকারকরা লজিস্টিক বিলম্ব, উচ্চ ব্যয় এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে পারেন। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বলছে ভিন্ন কথা। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের এমন সিদ্ধান্তের পর সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যে সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে ভারতকে এক কথায় বন্ধুহীন বলা চলে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ভারতের সম্পর্ক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বৈরী। সব ছাপিয়ে ভারতের এমন সিদ্ধান্তের পর দুদেশের সম্পর্কে ফের টানাপড়েন সৃষ্টি করতে পারে। তবে প্রশ্ন উঠছে, ভারতের এই সিদ্ধান্তে তাদের বাণিজ্যে আদৌ কোন সুফলতা নিয়ে আসতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সূত্রঃ https://www.facebook.com/watch/?v=1442357730423604&rdid=Tzsro9JV4dEXo157
ইমরান