ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

বিনিয়োগ সম্মেলনের ৩য় দিনের প্রেস ব্রিফিংয়ে বিডা চেয়ারম্যান

বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সব রাজনৈতিক দল একমত

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ৯ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৮:২০, ১০ এপ্রিল ২০২৫

বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সব রাজনৈতিক দল একমত

ছবি সংগৃহীত

রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি সবার মতামত একই। সেজন্যই তারা নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে বুশিয়ার, বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত ডকুমেন্টস ও উপহার দিয়েছেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের।

বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিনের আয়োজন শেষে এক সংক্ষিপ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এ সময় তিনি কোন দেশের বিনিয়োগকারীর সাথে ওই দিন কি আলোচনা এবং সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সম্মেলনে গত তিনদিন ধরে বিভিন্ন প্যানেল আলোচনায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বার বার জানতে চেয়েছেন বিদ্যমান নীতির ধারাবাহিকতা থাকবে কী না? এ বিষয়ে সম্মেলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির কাছেও তারা জানতে চেয়েছেন। এক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কি- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, তিনটি দলের সাথেই বিনিয়োগকারীরা মিটিং করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দল তিনটি তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন সম্মেলনে। তারা নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে বুশিয়ার, বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত ডকুমেন্টস ও উপহার দিয়েছেন বিনিয়োগকারীদের।

এর আগে কখনই কোনো বিনিয়োগ সম্মেলনে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাদা মিটিং করার সুযোগ দেওয়া হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, এবারই প্রথম এই সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রত্যেক দল তাদের নিজস্ব মতামত শেয়ার করতে পেরেছে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে। বিনিয়োগকারীরাও আলাদাভাবে দলগুলোকে প্রশ্ন করেছে, অন্তবর্তী সরকার যেসব সংস্কার করছে ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসলে তারা সেগুলোর ধারাবাহিকতা রাখবেন কি না? এ বিষয়ে দলগুলো কী উত্তর দিয়েছে সেটা বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন করলে জানা যাবে। তবে সাধারণত দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে সবার মত একই। বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করার বিষয়েও সবার লক্ষ্য এক। কারণ এই মূহুর্তে দেশে বিনিয়োগ দরকার। সেটি দেশি হোক আর বিদেশি হোক। অতএব এখানে কারো ভিন্ন মত প্রদর্শন করার কারণ নেই।

এর আগে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার অন্য দেশের তুলনায় অনক কম। এটাকে একটা মানসম্মত অবস্থানে নিয়ে যেতে হবে। সেজন্য আইএলওর সাথে বিডা একটা এমওইউ করেছে। কারণ বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে একটা সময় বায়াররা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। চীনের হান্দা ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির সাথে আরেকটি এমওইউ করা হয়েছে। তারা বাংলাদেশে ১৫ কোটি ডলার বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। এ বিনিয়োগ আসলে আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

আশিক চৌধুরী বলেন, আগামী মাসে ২০০ বিনিয়োগকারীসহ বাংলাদেশ সফরে আসবেন চীনের বাণিজ্য মন্ত্রী। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রী এ বিষয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন। জার্মানির বিনিয়োগকারীরাও আসতে চান। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিশেষ করে তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল, কেমিক্যালসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে।

তিনি বলেন, আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড গ্রুপ বাংলাদেশের মাতারবাড়ির কাছাকাছি ফ্রি ট্রেড জোন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ট্রেড জোনের বিষয়ে তাদের কারিগরি সহযোগিতা নিতে চেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে একটা টিম সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবে ফ্রি ট্রেড জোনের সামগ্রিক খুঁটিনাটি জানতে। ডিপি ওয়ার্ল্ড গ্রুপ হচ্ছে বৈশ্বিক বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা। এছাড়া প্রথমবারের মতো স্পেনের পোশাক জায়ান্ট ইনডিটেক্সের প্রতিনিধি বাংলাদেশ এসেছেন। তারাও ব্যবসা বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশের সাথে তারা সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে চান। লাফার্জ হোলসিমেরও একটা বড় বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা আছে। তারা কিছু সমস্যার কথা বলেছে। সেগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্পে বিনিয়োগের জন্য সরকারের পরিকল্পনা আছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মিলিটারিতে কিছু কাজ করা দরকার। এখাতের যন্ত্রপাতি তৈরির সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগকারী খোঁজার চিন্তা আছে। ভবিষ্যতে মিলিটারি ইকোনমিক জোনও হতে পারে।

আশিক

আরো পড়ুন  

×