
ছবি সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এর লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ হলেও, এই প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে জানিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
এটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য সংস্থাটির অনুমেয় গড় প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের তুলনায় অনেক কম বলে। একইসঙ্গে চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছাবে বলে সংস্থাটির তরফে জানানো হয়।
বুধবার প্রকাশিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) প্রতিবেদনে এশিয়ান দেশগুলোর ২০২৫ এবং ২০২৬ সালের প্রবৃদ্ধির এই পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম এই উন্নয়ন সহযোগী। আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে অনুমান করেছে এডিবি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি বাড়লেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, শিল্প খাতে অস্থিরতা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হওয়ায় প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস পাবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ।
এডিবির পূর্বাভাস অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৯ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১০ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছাবে। এক্ষেত্রে পাইকারি বাজারে প্রতিযোগিতার অভাব, বাজার সংক্রান্ত তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এবং টাকার অবমূল্যায়নকেই দায়ী করা হয়েছে। তবে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি জিডিপির ১ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জেয়ং বলেন, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সহনশীল রয়েছে। কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই সহনশীলতা আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।
তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করতে তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আর্থিক খাতের সুশাসন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এডিবি বলছে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ভোগ ও বিনিয়োগে কিছুটা গতি আসবে। তবে সংকোচনমূলক অর্থব্যবস্থা ও রাজস্ব নীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক অবস্থানের কারণে এই গতি সীমিত থাকবে। তাছাড়া অতিসম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর আমেরিকার নতুন শুল্ক হার আরোপে বাংলাদেশের রপ্তানি ও প্রবৃদ্ধি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এই সংস্থাটি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এর সদস্য দেশের সংখ্যা ৬৯টি। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং সহনশীল প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে।
আশিক