
চলতি মাসের শুরুতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের মতো ১০০টি দেশের উপর চড়া শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বৃহৎ রপ্তানি বাজারে এমন বাণিজ্যের বাধার খবরে নড়েচড়ে বসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত সোমবার ট্রাম্পকে পাঠানো প্রধান উপদেষ্টার চিঠিতে তিন মাসের জন্য ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব স্থগিতের আহ্বান জানানো হয়।
শুল্ক উত্তেজনার মধ্যে, ঢাকায় বসা বিনিয়োগ সামিটের ফাঁকে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কয়েকটি কোম্পানির প্রতিনিধিরা। এই বৈঠকে ইউএস বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এর নেতৃত্ব দেন এক্সলারেট এনার্জির কৌশলগত উপদেষ্টা ও সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেটা, ভিসা, সেভরন, উবার, বোইং সহ অনেক বড় কোম্পানির এক্সপার্ট কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা।
বৈঠকে, বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়তে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। আলোচনায় শুল্ক প্রসঙ্গ উঠে আসে। এতে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সাবেক সহকারী সচিব নিশা দেশাই বলেন, "মার্কিন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। তাই তারা আশা করেন শুল্ক ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ তাদের অবস্থান তুলে ধরবে।"
এদিকে, মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের উপর চড়া শুল্ক আরোপের প্রসঙ্গ উঠে আসে। বাংলাদেশ এবং মাদাগাস্কারসহ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশের উপর বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রভাব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিড জানান, "একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট আগামীতে যেকোনো দেশের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত।"
প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু দেশের উপর শুল্কারোপ করেছে যাদের অর্থনৈতিক অবকাঠামো বেশ দুর্বল, যেমন বাংলাদেশ ও মাদাগাস্কার। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসব দেশগুলোর সঙ্গে কিভাবে বাণিজ্য ঘাটতি ঠিক করতে চান এবং এসব দেশের টেক্সটাইল শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে।"
"বিভিন্ন দেশ এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর আর্থিক ও অার্থিক নীতি দ্বারা বাণিজ্য বাধা তৈরি করে রেখেছিল। যা দীর্ঘ সময় ধরে কার্যকর থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এসব দেশে রপ্তানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে প্রেসিডেন্ট যে কোন দেশের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত। যে দেশ ফোন করবে, সে দেশের প্রশাসনের সঙ্গেই কথা বলবেন তিনি। বাণিজ্য চুক্তি করতে এরই মধ্যে অনেক দেশ যোগাযোগ করেছে," বলেন ক্যারোলাইন লেভিড।
এর আগে, গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি এর কাছে একটি চিঠি পাঠান বাণিজ্য উপদেষ্টা। এতে, ট্যারিফ লাইনের আগের ১৯০টি সহ ১০০টি পণ্য শুল্কমুক্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ভাবছে বলে উল্লেখ করা হয়।
সূত্র:https://tinyurl.com/mr3hmmv8
আফরোজা