
ছবিঃ সংগৃহীত
এক সময় মামলার মোড় তুড়ি মেরে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য পরিচিত ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে ঘিরে সম্প্রতি একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এসেছে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেত্রী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক সিনিয়র প্রসিকিউটর এই ব্যারিস্টার তার জন্মধাত্রী মা ও আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০১৩ সালে শেখ হাসিনার অন্যতম আস্থাভাজন হিসেবে তুরিন আফরোজকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সিনিয়র প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকে বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা পরিচালনা করেন তিনি, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
অভিযোগ রয়েছে, পৈতৃক সম্পত্তি এককভাবে ভোগ করার লক্ষ্যে তুরিন তার মায়ের বিরুদ্ধেও মামলা করেন এবং ভাইয়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যান। তিনি নাকি জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল তৈরি করে পুরো পৈতৃক বাড়ির একক দখল নেন এবং মা ও ভাইকে সেই বাড়ি থেকে বের করে দেন। এমনকি অভিযোগ রয়েছে, তুরিন আফরোজ তার মায়ের ওপর শারীরিক নির্যাতনও করেছেন।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি নিজেই বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, বিভিন্ন প্রভাবশালী শিল্প পরিবারের কর্ণধারদের একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত করার ভয় দেখিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন।
মো. ওয়াহিদুল হক নামক এক সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুসারে, তিনি গোপনে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অর্থ গ্রহণ করে তাকে দায়মুক্তির আশ্বাস দেন।
তার বেপরোয়া আচরণই নাকি তাকে শেখ হাসিনার স্নেহভাজন করে তোলে, যা ছিল তার সাহস ও ক্ষমতার প্রধান উৎস। তিনি ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মো. কামরুজ্জামান এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করেন।
ট্রাইব্যুনালে শুনানির সময় তিনি নিজে আটকে গেলে দায়ভার ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বা জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ (JCE)-এর ওপর চাপিয়ে দিতেন বলেও অভিযোগ আছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী জবানবন্দি দেওয়ার সময় তুরিন আফরোজ নাকি বারবার বাধা দেন।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, তিনি বোরকা পরে এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালকের কাছে ঘুষ নিতে গিয়েছিলেন, যার ফলস্বরূপ তিনি চাকরি হারান।
ইসলাম ও ইসলামপ্রিয় মানুষ ছিলেন তুরিন আফরোজের "প্রাণের দুশমন"।
মারিয়া