ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশ-পাকিস্তান রাজনৈতিক সংলাপ, ভারতের মাথায় হাত!

প্রকাশিত: ০০:৫৪, ৯ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ-পাকিস্তান রাজনৈতিক সংলাপ, ভারতের মাথায় হাত!

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পর আবারও এক টেবিলে বসতে যাচ্ছে ঢাকা ও ইসলামাবাদ। চলতি এপ্রিল মাসেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক সংলাপ, যা দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ধারাবাহিকতারই অংশ। আর এই সম্পর্কের উষ্ণতা ভারতের জন্য যেন এক ধরনের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঐতিহাসিকভাবেই ভারত উপমহাদেশে নিজের দাদাগিরি বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ভারতের জন্য এক ভূকৌশলগত লাভের বিষয় ছিল। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবর্তন, বিশেষ করে সাম্প্রতিক ‘জুলাই বিপ্লব’-এর পর থেকেই ভারতের প্রভাব কিছুটা কমে গেছে এবং পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন মোড় নিচ্ছে।

১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও ঐতিহাসিক দ্বন্দ্বের কারণে দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে শীতল ছিল। তবে এখন সেই সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে নতুনভাবে সখ্যতা গড়ে তুলছে ঢাকা।

স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনো পণ্যবাহী জাহাজ করাচি থেকে বাংলাদেশে এসেছে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশের যুদ্ধজাহাজও করাচিতে আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউতে অংশ নিয়েছে। সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালুর উদ্যোগ, তথ্য ও চিঠিপত্র আদান-প্রদান, উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক—সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডেইলি পাকিস্তান জানিয়েছে, আসন্ন সংলাপে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে পারস্পরিক সমন্বয় এবং ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণের প্রস্তুতি নিচ্ছে উভয় পক্ষ। আলোচনায় একটি যৌথ কমিশন পুনরায় চালুর প্রস্তাবও আসতে পারে বলে জানা গেছে, যা নীতিগত সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

এই রাজনৈতিক সংলাপের আগেই ঘোষণা এসেছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইসহাক ডার ২২ থেকে ২৪ এপ্রিল ঢাকা সফর করবেন। এই সফরকে কেন্দ্র করে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ভারত এই নতুন উন্নয়ন দেখে স্বস্তিতে নেই। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের প্রভাব কমে যাওয়ায় দিল্লির অস্বস্তি বাড়ছে। ইসলামাবাদ-ঢাকার ঘনিষ্ঠতা ভারতের কূটনৈতিক মহলে একপ্রকার টেনশনের জন্ম দিয়েছে। যেন ভারতের বহুদিনের জমিদারি হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ার ভয় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

এই সংলাপ শুধু দুই দেশের নয়, দক্ষিণ এশীয় ভূরাজনীতির জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠতে পারে। এখন দেখার বিষয়—এই নতুন অধ্যায়ে ভারত কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে, নাকি সম্পর্কের উষ্ণতায় সত্যিই ভারতের মাথা নষ্ট হয়ে যাবে।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/g9Z3FpCd1gc?si=GerimwZ4TVThKsoU

×