
ছবি: সংগৃহীত
অসামাজিক কাজে লিপ্ত ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ এবং সে ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে সাংবাদিকসহ স্থানীয়দের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হয়। মিথ্যা মামলা ও হয়রানি বন্ধসহ দুর্নীতিবাজদের প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনিক ভবন গেট সংলগ্ন এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের দোসর গোদাগাড়ী উপজেলার বর্তমান ইউএনও ফয়সাল আহমেদের প্রত্যক্ষ মদদে তার ও পূর্বের ইউএনও এর 'রাইট হ্যান্ড' খ্যাত উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ও কাজের মেয়ে রুবিনার যোগসাজশে স্থানীয় সাংবাদিক ও জনতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়। মামলার পর থেকে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। আ. লীগের দোসর উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার পরেও এখনো বহাল তবিয়তে থাকায় স্থানীয় সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
স্থানীয় রুপালী ভবনে উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর কাজের মেয়ের সাথে অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় স্থানীয় জনগণ তাদের আটক করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন দৈনিক জনকণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি অলিউল্লাহসহ অনেকেই। এরপর ওই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গোদাগাড়ী থানার আরেক দুর্নীতিবাজ আ. লীগের দোসর ওসি রুহুল আমিনের সহযোগিতায় মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। পরে অবশ্য ওই মামলায় সবাই জামিন নেন। শুধু মিথ্যা মামলা দিয়েই ক্ষান্ত হননি ওই উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর। পরে তার সাথে ওই নারীর বিয়ে করার বিষয়েও আলোচনা হয়। বিয়ের পরে ওই নারীকে দিয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে সাংবাদিকসহ স্থানীদের একের পর এক হুমকি-ধমকিও প্রদান করছেন তিনি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করাসহ সমাজের অনিয়ম তুলে ধরায় হামলা মামলার শিকার হয়। তেমনি একটি ঘটনায় গত ১ মার্চ গোদাগাড়ী মডেল থানায় ও ৬ এপ্রিল রাজশাহীর আদালতে পৃথক ২ টি মামলা করে উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ও কাজের মেয়ে রুবিনা।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হাফিজুর রহমান কাজের মেয়ে রুবিনার অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় জনতার হাতে আটক হয়। এ বিষয়ে সাংবাদিক অলিউল্লাহসহ রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা নিউজ প্রকাশ করেন। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আটকের ঘটনার ভিডিও ভাইরাল করেন সাধারণ জনগণ। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গোদাগাড়ী উপজেলার প্রশাসনের পরামর্শে মামলা করেন তারা। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে ওই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ইউএনও ফয়সাল আহমেদ ও কর্মকর্তা হাফিজুরের অপসারণের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ও ইউএনওসহ উপজেলা প্রশাসনের কতিপয় আ. লীগের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিসহ উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এছাড়াও এ ঘটনায় স্থানীয়রাসহ সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করবেন। প্রদান উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিলও করবেন তারা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ পত্রিকার গোদাগাড়ী প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, কালবেলার সাংবাদিক জামিল, সংগ্রাম পত্রিকার সাংবাদিক আব্দুল খালেক, উপচার পত্রিকার সাংবাদিক সারোয়ার সবুজ, সময়ের আলো পত্রিকার সাংবাদিক আবু তাহের, মানবকণ্ঠের সাংবাদিক মানিক হোসেন, নববাণীর সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম, জনকণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক অলিউল্লাহসহ স্থানীয় জনসাধারণ।
উল্লেখ্য, গোদাগাড়ী উপজেলার উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান ও কাজের মেয়ে রুবিনা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫টায় উপজেলার রুপালী ভবনের ২য় তলায় জনতার হাতে আটক হন। এ বিষয়ে নিউজের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় তাদের ভিডিও। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ১ মার্চ একটি মিথ্যা মামলা করেন হাফিজুর। প্রথম অভিযোগে বলা হয়, বর্তমান ও সাবেক ইউএনও'র পরামর্শে অভিযোগ করেন তিনি। পরবর্তী অভিযোগে বলা হয়, পরিবারের পরামর্শে।
এছাড়াও রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর হাফিজুরের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে ১৮ আগস্ট ১৭৫৬ নং ডকেটে ঘুষ, দুর্নীতি ও বাঘা-চারঘাটে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ দেওয়া হয়।
রাকিব