
ছবি: সংগৃহীত
সর্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির উদ্যোগে খাগড়াছড়ি জেলা শহরে বৈসাবি উৎসব কে স্বাগত জানিয়ে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার(৮ এপ্রিল) সকালে চেঙ্গী স্কোয়ার থেকে সার্বজনীন বৈসাবি উদযাপন কমিটির আয়োজনে শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন বৈসাবি উদযাপন কমিটি ২০২৫ এর আহ্বায়ক রবিশংকর তালুকদার, সদস্য সচিব প্রত্যয় চাকমা। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে নিউজিল্যান্ড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। হাজারো পাহাড়ি নারী-পুরুষের বর্ণিল পোশাকে অংশগ্রহণে র্যালিটি খাগড়াছড়ি শহরকে রঙ্গিন করে তুলে।
বৈসাবি মানেই রঙে-বর্ণে বৈচিত্রময় এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু, যে নামেই বলা হোকনা কেনো, এই উৎসব যেনো পাহাড়িদের প্রেরণা-পাহাড়ের সংস্কৃতির জাগরণ।
আগামী ১২ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায়ের তরুন-তরুনী,কিশোরী-ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ভোওে ফুল তুলে নদী বা খালে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে পূজা নিবেদনের মধ্য দিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরের শুভ কামনায় নিজেদের পবিত্রতা কামনা করবে। এ ছাড়া ফুল দিয়ে ঘরের প্রতিটি দরজার মাঝখানে মালা গেঁথে সাজানো হয়।
১৩ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায়ের মূল বিজু আর পরের দিন ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা পালন করবে। একই দিন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারি বৈসু,বিযুমা ও বিচি কাতাল। ১৪ এপ্রিল খাগড়াছড়িতে মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাই উৎসবে ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা পানি খেলা ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হবে বর্ষ বরণের র্যালী। এ উৎসবে আনন্দের আমেজ ছড়ায়। এই প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে আনন্দ মুখর করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সবাই। চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই, আর ত্রিপুরাদের বৈসু নিয়ে বৈসাবি। উৎসবের আরো কয়টি বাকী থাকলেও এই উৎসবকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে চলছে বৈসাবি মেলা-খেলাধুলা ও র্যালীসহ নানা আয়োজন।
১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়ি সহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উসবপালন করে আসছে। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জন প্রিয় হয়ে উঠে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ‘ত্রিপুরা ভাষায় বৈসুক, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু’নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নাম করণ করা হয়। প্রতি বছর বাংলা নববর্ষের পাশা পাশি পাহাড়ের বসবাসরত বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী ঐতিহ্যবাহী এ দিনটি পালন করে থাকে।
জীতেন বড়–য়া/মেহেদী হাসান