ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ৪ বিমান ধ্বংসকারী বাংলাদেশি সাইফুল আজম গাজার জন্য বীরত্বের এক প্রেরণা

প্রকাশিত: ১৭:২০, ৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৭:২৪, ৮ এপ্রিল ২০২৫

আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ৪ বিমান ধ্বংসকারী বাংলাদেশি সাইফুল আজম গাজার জন্য বীরত্বের এক প্রেরণা

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের যে মা আজ সন্তান হারানোর বেদনায় কাঁদতে ভুলে গেছে, সেই বেদনা এখন গাজার মিছিলে শামিল কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে। এশিয়া থেকে আফ্রিকা, ইউরোপ থেকে আমেরিকা, কোটি মানুষের একটাই প্রার্থনা: "হায় খোদা, এই বর্বর ইসরাইলকে থামাতে পারে কে?"

এই লাখো কণ্ঠের মাঝে এক নাম আজও গাঁথা হয়ে আছে - সাইফুল আজম। গাজার মানুষ, বিশেষ করে গাজার মা'রা আজও প্রার্থনা করেন সাইফুল আজমের মত একজন বীরের ফিরে আসার জন্য। তাদের বিশ্বাস, শুধুমাত্র একজন সাইফুল আজমই পারে ইসরাইলের সেনাদের বুক কাঁপিয়ে দিতে এবং গাজার দুর্দশার অবসান ঘটাতে।

বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমর বীর, সাইফুল আজম একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ইসরাইলি যুদ্ধবিমানের সর্বাধিক সংখ্যা ভূপাতিত করার রেকর্ড গড়েছেন। ১৯৬৭ সালে তৃতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধে তিনি ইরাকি বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন। সে সময়, তার অকল্পনীয় সাহসিকতা এবং বীরত্ব তাকে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশে গৌরবের প্রতীক করে তোলে।

বিশেষত, জুন ১৯৬৭ সালে, যখন ইসরাইল ব্যাপকভাবে পশ্চিম তীর, সিরিয়া এবং গাজা দখল করে, সাইফুল আজম তার হকার হান্টার বিমানে চারটি ইসরাইলি সুপার মিস্টির বিমান আক্রমণ করে এবং দুটি বিমান ভূপাতিত করেন। তার এই অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য তাকে 'হুসাম আল-ইস্তেখলাল' সম্মাননা দেয় জর্ডান সরকার।

সাইফুল আজমের বীরত্ব থেমে থাকেনি। তিনি পাকিস্তান, জর্ডান, ইরাক ও বাংলাদেশ—এই চারটি দেশের বিমান বাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সাথে তিনি আটটি দেশের বিমান বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, রাশিয়া ও চীনও অন্তর্ভুক্ত। তার অবদান এবং কৃতিত্বের জন্য ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী তাকে লিভিং এগলস সম্মাননা প্রদান করে।

আজও গাজার বয়স্ক মানুষরা নামাজে দাঁড়িয়ে সাইফুল আজমের জন্য প্রার্থনা করেন, আশায় যে ফিনিক্স পাখির মতো সাইফুল আজমের বিমান একদিন তাদের পাশে দাঁড়াবে। তিনি যে শুধু গাজার শিশুদের হাসি ফেরাবে, তা নয়; তার সাহসিকতা গাজার মানুষের মুক্তির পথ খুলে দিতে পারে, এমনটাই বিশ্বাস তারা করে।

সাইফুল আজমের এই অমর বীরত্বের কাহিনী আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, সাহস ও দৃঢ়তার মধ্যে এমন শক্তি থাকে যা পৃথিবীর অন্ধকারতম সময়েও আশা জাগাতে পারে। গাজার মানুষদের জন্য তাঁর গল্প এক প্রেরণার উৎস, যারা আজও শান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

মেহেদী হাসান

আরো পড়ুন  

×