ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১

গাজায় ইসরাইলের বর্বরতার প্রতিবাদ

বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ৭ এপ্রিল ২০২৫

বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংসতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল

গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা চলছেই। প্রতিদিনই ঝরছে শত শত প্রাণ। বাদ যাচ্ছে না নারী-শিশুরাও। এ দিকে বিশ্বমোড়লরা নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছে। তাদের ‘ঘুম ভাঙাতে’ সোমবার ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুঁসে ওঠে। ‘ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’র সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী সংগঠন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতার ব্যানারে দিনভর বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল ছিল ঢাকাসহ পুরো দেশ। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও। বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে দিনভর বিক্ষোভ করেছে রাজপথে। এক কথায় ইসরাইলি বর্বরতার বিরুদ্ধে পুরো বাংলাদেশই যেন প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছিল। 
এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা, গণহত্যা ও মানবাধিকার  লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে দিনভর উত্তাল ছিল রাজধানী ঢাকা। কর্মদিবস উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ।

শুধু প্রতিবাদই নয়, ইসরাইলি পণ্য বয়কটের ঘোষণার পাশাপাশি সিলেট, খুলনা ও চট্টগ্রামে কেএফসি রেস্টুরেন্ট ও বাটা শো-রুমে ভাঙচুর এবং ইহুদিদের প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কোমল পানীয় নষ্ট করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সোমবার সকাল থেকেই ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয় প্রতিবাদী মিছিল, বিক্ষোভ ও সমাবেশ। সরেজমিনে ঢাকার পল্টন, গুলিস্তান, শাহবাগ, ঢাবি ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী সংগঠন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল ছিল ঢাকার সড়কগুলো। ঢাকা ছাড়াও দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই হাজার হাজার মানুষ রাজপথে দাঁড়িয়ে ইসরাইলির বর্বরতা ও গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। 
গাজায় চলমান গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধের দাবিতে কয়েকটি জায়গায় মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করে।
বিশ্ব কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন এবং সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসও বন্ধ রাখা হয়। স্বাধীন ফিলিস্তিন ও গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন।

বিশ্বব্যাপী ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে নিজ ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থসাউথ ও ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরাও। সায়েন্সল্যাব, বসিলা, মিরপুর ও উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে বিক্ষোভ করেছেন বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও।
অনেককে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যেতে দেখা গেছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসহ (ঢামেক) বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সেখানে বিক্ষোভ করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এমনকি শিশুরাও টিএসসির সামনে জড়ো হয়ে ফিলিস্তিনে চলমান ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। তারা ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। অনেকের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা ছিল।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ব নেতারা ফিলিস্তিনের জনগণকে ভুলে যাওয়ায় আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চাই, যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরাইলি নেতাদের বিচার চাই।’ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও ভাটারায় বিক্ষোভ করেছেন কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। সেই সময় তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
সহিংসতা বন্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস একযোগে বন্ধ করে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্টরা। তাদের ডাকে সাড়া দিয়েই বাংলাদেশে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায়  সোমবার সারাদেশে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানায়। এদিকে বিক্ষোভ ঘিরে গুলশান ও বারিধারা এলাকায় কূটনৈতিক জোনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু করা ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ হাজার ৬৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও এক লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজার প্রায় ৬৯ শতাংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিযেছে, ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ও অপরাধের প্রতিবাদে সোমবার এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল।
ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি চলছে। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর জায়গায় কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে কর্মসূচি পালন করছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বাড্ডায় নো ওয়ার্ক-নো ক্লাস কর্মসূচি পালন করছে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। বক্তারা বলেন,  দ্রুত ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করা হোক। আর যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলা বন্ধের দাবিতে একই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র শিবিরসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। রবিবার রাতেই ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও নোটিস গাজার পক্ষে দিয়ে সংহতি জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিশ্বব্যাপী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শিক্ষকরা নো ওয়ার্ক কর্মসূচি এবং শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। সংহতি প্রকাশ করে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে নো ওয়ার্ক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এর আগে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে উত্তাল টিএসসি ॥ কারও হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, কারও হাতে ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের প্ল্যাকার্ড, কেউবা গায়ে ফিলিস্তিনের পতাকা জড়িয়ে এসেছিলেন। চারদিক থেকে একক ও দলবদ্ধভাবে সবাই টিএসসিতে এসে জড়ো হয়। প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো টিএসসি এলাকা। সবার একই দাবি গাজায় গণহত্যা বন্ধ করা। বর্তমানে টিএসসির পুরো অংশ ‘নো স্কুল, নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচির সমর্থনকারীদের দখলে ছিল। 
সোমবার বিকেল ৩টায় টিএসসি চত্বরে এমন দৃশ্য দেখা যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত টিএসসিতে আন্দোলনকারীদের স্লোগানে মুখরিত ছিল। কর্মসূচিতে ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘আমার ভাই মরল কেনো, জাতিসংঘ জবাব দাও’, ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’  প্রভৃতি স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনোয়ার হোসেন বলেন, ফিলিস্তিনে ইসারাইলি বাহিনী যে হামলা চালাচ্ছে এর চেয়ে জঘন্য কিছু হয় না। সেখানে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম গণহত্যা চলছে। কিন্তু জাতিসংঘ নীরব। আমরা তাদের ধিক্কার জানাই। গাজায় আর একজন মুসলমান মারা গেলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেব।
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী  বলেন, বোমার আঘাতে ছোট শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে এর চেয়ে কঠিন কোনো দৃশ্য হতে পারে না। আমরা আর একটা মানুষেরও মৃত্যু দেখতে চাই না। এই গণহত্যার অবসান চাই এবং ইসরাইলের বিচার চাই।
উত্তাল মানিক মিয়া এভিনিউ ॥ ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের নির্মম হামলার প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় ওই এলাকার চারদিকে বিক্ষোভকারীদের ঢল নামে। সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন ফটোকার্ড ও ব্যানার নিয়ে মিছিল নিয়ে সমবেত হন শত শত মানুষ।
সোমবার বিকাল ৪টায় সরেজমিন দেখা যায়, তরুণ-তরুণী শিক্ষার্থী ও নানা পেশাজীবী মানুষ একে একে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে সংসদ ভবনের সামনে সমবেত হন। ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশ শেষে বিকাল ৫টার দিকে একটি প্রতিবাদী মিছিল বের করে মানিক এভিনিউ সড়কে প্রদক্ষিণ করে।
ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়াতে মুসলমান নয়, হতে হবে মানুষ, আমার ভাই মরলো কেনও জবাব চাই, লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, বীর বাঙালি জেগেছে, ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, ফিলিস্তিনি মুক্ত করো, এমন নানান স্লোগানে মুখর হয়েছিল পুরো প্রাঙ্গণ। 
বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করা একজন প্রকৌশলী শেখ মমিনুল হক বলেন, আজকে আমরা এসেছি এটি আমাদের ইমানি দায়িত্ব। আমাদের এখানে থেকে দাবি তুলতে চাই। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী তিনি একজন কূটনৈতিক কৌশলী। বাংলাদেশের ১৮ কোটির প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের একটাই দাবি, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে আমাদের রাষ্ট্র প্রধানকে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে রক্তকরণ হচ্ছে, সবার ঘর থেকে বের হতে হবে।
পুরো ঢাকাতেই বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ॥ ফিলিস্তিনে ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে মিরপুর-১২ বাসস্ট্যান্ডের এলাকায় বিক্ষোভ করছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার বিইউপির সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিরপুর-১২ বাসস্ট্যান্ডের এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এই প্রতিবাদ কর্মসূচি ফিলিস্তিন জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করার জন্য ডাকা হয়েছিল, যেখানে তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং ফিলিস্তিন সংগ্রামের প্রতি একযোগে দাঁড়ায়।
তাদের বক্তব্যে, প্রতিবাদকারীরা গাজায় চলমান গণহত্যা, দখলদারি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান এবং ইসরাইলকে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও পণ্যের বয়কটের জন্য আহ্বান জানান।
বিইউপির কয়েকজন শিক্ষার্থী  বিক্ষোভে এসে বলেন, ‘আমরা এই ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানাই। ফিলিস্তিনিদের এই হত্যার ঘটনা ইতিহাসের সব ধরনের বর্বরতাকে ছাড়িয়ে গেছে। গাজায় যে গণহত্যা চালানো হচ্ছে সেটা কি বিশ্ববাসী দেখছে না? আজ জাতিসংঘ কোথায়? মানবাধিকার কোথায়? যত মানবাধিকার কি শুধু তাদের বেলায়? আমরা ফিলিস্তিনের কর্মসূচির সমর্থনে এখানে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।’
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জন করে প্রতিবাদ মিছিল করে। বিকাশ ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে মিছিল শুরু হয়। এতে শিক্ষার্থী ছাড়াও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ঘুরে পুনরাায় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। পরে সংহতি সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক ও ছাত্ররা বক্তব্য রাখেন।
ঢাকার রাজপথে নারী-শিশু-বৃদ্ধরা ॥ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে উত্তাল ছিল রাজধানী ঢাকা। কর্মদিবস উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে এসেছেন হাজারো মানুষ। প্রতিবাদে নেমেছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও। সোমবার সকাল থেকেই ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল, বিক্ষোভ ও সমাবেশ। যেখানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। 
সরেজমিনে ঢাকার পল্টন, গুলিস্তান, শাহবাগ, ঢাবি ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী সংগঠন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল ঢাকার সড়কগুলো।
কর্মসূচিতে দুই মেয়ে ও পুরো পরিবারসহ অংশ নিয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাজিম আলম। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। ইসরাইলের বর্বর বাহিনী মায়ের কোলের শিশুকেও ছাড়ছে না। তাই আমার চোখের মনি দুই শিশু মেয়েকেও নিয়ে এসেছি। ইসরাইল হত্যাযজ্ঞ চালাবে, আর পুরো পৃথিবীর মুসলিমরা তা তাকিয়ে দেখবে, এটা হতে পারে না। এরই প্রতিবাদে আমরা মাঠে নেমেছি।

ওআইসির কার্যকরী ভূমিকা চান ইলিয়াস কাঞ্চন ॥ ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনী যে বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে এর কড়া সমালোচনা করেছেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের আহ্বায়ক ও নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এ ঘটনায় জাতিসংঘের নীরব ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি এবং মুসলিম বিশ্বের সংগঠন ওআইসির ভূমিকা প্রত্যাশা করেন। ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় হামলার প্রতিবাদে গণশক্তি সভা নামক একটি সংগঠনের আয়োজনে আয়োজিত প্রতিবাদী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
শহীদ মিনারে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ॥ ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকবৃন্দ। সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী, চিকিৎসক ও শিক্ষকবৃন্দ।
বিক্ষোভ সমাবেশে মানবাধিকার ও শান্তির পক্ষে স্লোগান দেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর ইসরাইলের হামলা এবং গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তারা এ পরিস্থিতি থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার জোর তৎপরতার দাবি জানান।
সমাবেশে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কামরুল আলম বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে আমরা মানবাধিকার, শান্তি এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। ফিলিস্তিনের জনগণের শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ঢামেকের রেসিডেন্ট চিকিৎসক ডা. মোবারক হোসেন বলেন, আমরা এই ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানাই। ফিলিস্তিনে নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং চিকিৎসকদের হত্যার ঘটনা ইতিহাসের সব ধরনের বর্বরতাকে ছাড়িয়ে গেছে। আজকের এই বিক্ষোভের মাধ্যমে আমরা ইসরাইলকে বয়কটের ঘোষণা করছি। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত নানা প্ল্যাকার্ড শোভা পায়। 
রাজধানীজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ॥ রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘স্টপ কিলিং ইন গাজা’সহ নানা স্লোগান দেন। শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচি চলাকালীন সড়কে যান চলাচলে সাময়িক কিছুটা সমস্যা হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান ইসরাইলি বর্বরতার প্রতিবাদে মিছিল-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানীর বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। এ সময় নানান প্ল্যাকার্ডে ইসরাইলি বর্বরতার বিপক্ষে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, অনতিবিলম্বে এই হত্যা বন্ধ করতে হবে। এসময় ইসরাইলকে বিশ্বের মানচিত্র থেকে গণহত্যার দায়ে মুছে ফেলার আহ্বান জানান তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমেরিকার মতো যেসব দেশ এমন গণহত্যা দেখে নিশ্চুপ, তাদেরও বয়কট করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলো কাপুরুষতার পরিচয় দিচ্ছে, যার জন্যই সুযোগ পাচ্ছে ইসরাইল। অনতিবিলম্বে মুসলিম দেশগুলোকে এককাতারে এসে এই গণহত্যার প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা-বিবৃতি, যুক্তরাষ্ট্রের হাইকমিশনারকে তলব করে জবাবদিহি চাওয়ার দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম আজাদ ফিলিস্তিন। একইসঙ্গে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ করাসহ মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে মার্চ করবে প্ল্যাটফর্মটি।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটির সংগঠক ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ পদযাত্রা শুরু হবে।
স্লোগানে মুখর বায়তুল মোকাররম এলাকা ॥ ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের নির্মম হামলার প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সমবেত হয়েছিলেন মুসল্লিরা। এ সময় তারা ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখর করে তোলেন মসজিদের উত্তর পাদদেশ।

সোমবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত ‘বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজাবাসীর ডাকা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশের আগে এমন স্লোগান দেন তারা।
এর আগে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে শুরু হয় জোহরের নামাজ। দুপুর ১টা ২৭ মিনিটে শেষ হয় নামাজের কার্যক্রম। এরপরই মুসল্লিরা স্লোগান দিয়ে ওঠেন ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’। পরেই মসজিদ থেকে বেরিয়ে সবাই সমবেত হন মসজিদের উত্তর পাদদেশে। এখানে সবাই একসঙ্গে ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়াতে শুরু করেন। আর স্লোগানে গলা মেলান।
এ সময় তারা স্লোগান দেন ‘ইসরাইলের কালো হাত, ভেঙে দাও ভেঙে দাও’, ‘ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ’। নামাজে অংশ নিতে শত শত মুসল্লি বায়তুল মোকাররমে আসেন। আগত মুসল্লিদের অনেকের হাতেই ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।
ঢাকায় বিক্ষোভ, নিরাপত্তা জোরদার ॥ ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলি বর্বরতার প্রতিবাদে মিছিল-স্লোগানে উত্তাল ছিল রাজধানী। হামলার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি পালিত হয়। এদিকে চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিনে সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ কানেক্ট ২০২৫’-এর উদ্বোধন করা হয়েছে। এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন অনেক বিদেশীও।
এই সম্মেলন ঘিরে, গাজায় চলমান ইসরাইলি বর্বরতার প্রতিবাদে কর্মসূচিতে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং রাজধানীবাসীকে নিরাপত্তা দিতে ঢাকার নিরাপত্তা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার সকাল থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশসহ সেনাবাহিনীকে অবস্থান ও টহল দিতে দেখা গেছে।
পুলিশ বলছে, গাজায় হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলে নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে পুলিশ। এছাড়া রাজধানীতে চলাচলরত নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যে কোনো বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।
ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা জানতে চাইলে ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলি রিলেসন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ঢাকায় পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু জায়গায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ নজরদারি করছে।

এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি, সব জায়গায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। কর্মসূচি পালিত হয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এলাকায়। সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর গুলশানে মার্কিন দূতাবাসের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
কেএফসি-কোকাকোলা-বাটা শোরুমে হামলা  ॥ গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ-র‌্যালি করা হয়েছে। সোমবার বিক্ষোভ চলাকালে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, বগুড়া ও গাজীপুরে কেএফসি, কোকাকোলা ও বাটাসহ বিভিন্ন দোকান ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ-র‌্যালি থেকে ইসরাইলি পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন সর্বস্তরের জনগণ।    
আমাদের প্রতিবেদক ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 
খুলনায় কেএফসি ও বাটার শোরুম ভাঙচুর ॥ খুলনা নগরীতে কেএফসি নামের একটি রেস্টুরেন্ট ও বাটার শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে ইসরাইলবিরোধী আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যায় ভাঙচুর ও মালপত্র বাইরে ফেলে দেয় তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে সোমবার বিকেলে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে ফেরিঘাট মোড়ের দিকে মিছিল বের হয় এবং মিছিলটি ফেরিঘাট মোড় ঘুরে আবার শিববাড়ি মোড়ে যায়। 
তবে মিছিলের একাংশ নগরীর ময়লাপোতা মোড়ের দিকে যায়। এরপর সন্ধ্যায় তারা কেএফসিতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ ছাড়া বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বাইরে ফেলে দেয়। ভাঙচুরকারীরা ইসরাইলি পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরে কেএফসিতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের চেয়ার-টেবিল, ডেস্ক, ক্যাশ কাউন্টার, টিভি, ফ্রিজ সবকিছু ধংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

কেএফসির সামনের সড়কেও কিছু আসবাবপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। তবে কেএফসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউ এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি। এরপর কিছু লোক নগরীর শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে হোটেল টাইগার গার্ডেন ভবনের নিচতলায় বাটার শোরুমে ভাঙচুর চালায়। এ সময় শোরুম কর্তৃপক্ষ দাবি জানায়, তাদের মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, কেএফসি ও বাটার শোরুম ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
চট্টগ্রামে কেএফসি ও কোকাকোলায় হামলায় ॥ ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইসরাইলবিরোধী কয়েকটি বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে কেএফসি রেস্তোঁরা এবং কোকাকোলার সাইনবোর্ড সম্বলিত একটি ভবনে ইট-পাটকেল এবং জুতা নিক্ষেপ করেছে বিক্ষোভকারীরা। এতে ওই রেস্তোঁরা এবং ভবনের সামনের অংশের কাঁচ ভেঙে যায়। এ ছাড়া নগরীর কাজীর দেউড়ী এলাকায় ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা।
সকাল থেকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সংগঠন ও রাজনৈতিক দল গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরের দুই নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানের সামনে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইনকিলাব মঞ্চ ও হেফাজত ইসলামের পাঁচলাইশ থানা শাখার উদ্যোগে খ- খ- বিক্ষোভ মিছিল জিইসির দিকে রওনা হয়। এদিকে নগরীর আন্দরকিল্লা, জমিয়াতুল ফালাহ, চকবাজার, বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিক্ষোভকারীরা। 
কক্সবাজারে ৫টি রেস্তোরাঁ ভাঙচুর ॥ দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির সামনে শহীদ দৌলত ময়দান থেকে একটি মিছিল থেকে পাঁচটি রেস্তোরাঁ ভাঙচুর হয়।
কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ ইসরাইলি পণ্য বর্জনের কথা বলে কেএফসি, পিৎজা হাট, কাঁচা লঙ্কা, পানশি রেস্তোরাঁ ও মেরিন ফুড রেস্তোরাঁ ভাঙচুর করে। এ সময় বেশ কয়েকজন পর্যটক আহত হয়েছেন। 
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, মিছিল অনেক বড় ছিল। কিছু অতি উৎসাহী লোক রেস্তোরাঁ লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে এবং পেপসির সাইনবোর্ড ভেঙে দেয়। 
সিলেট ॥ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় বিক্ষোভ করেন হাজারো ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সিলেট শহরের মিরবক্সটুলা এলাকায় কেএফসির একটি শাখায় হামলা-ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা।

এছাড়া, কোমল পানীয় কোকা-কোলা রাখার জন্য কয়েকটি রেস্তোরাঁ ভাঙচুর করে জনতা। বিভিন্ন দোকান থেকে কোকাকোলা ও পেপসির কোমল পানীয় বের করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি থাকা আন্তর্জাতিক জুতার ব্র্যান্ড বাটাতেও হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে।
বগুড়া ॥ বগুড়ায় হাজারো ছাত্র-জনতা বিক্ষোভের মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় বাটা জুতার শোরুমে ভাঙচুর চালায়। 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা সাতমাথার বাটা শোরুমে ইট-পাথর ছুঁড়ে মারে। এতে দ্বিতীয় তলায় শোরুমের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। তবে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দিন বলেন, বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, মিছিলের সামনে ও  পেছনে পুলিশ ছিল। মিছিল থেকে কে বা কারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে তা বোঝা যায়নি। তাতে বাটার দোকানের অল্প কিছু ক্ষতি হয়েছে। 
গাজীপুর ॥ বিকেল সাড়ে ৩টায় গাজীপুরের বোর্ডবাজারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাটা জুতোর শোরুমের সামনে ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনতা। 
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, উত্তেজিত জনতা বোর্ডবাজার এলাকায় সেভেন আপের ব্যানার-বিলবোর্ড ভাঙচুর করেছে। তিনি আরও বলেন, ইসরাইলি পণ্য যেসব দোকানে আছে, সেসব দোকান বন্ধ করে দিতে বলেছে জনতা। এসব পণ্য বর্জন করতে সড়কের পাশে ৩-৪টি দোকানের সামনে বিলবোর্ড-ব্যানার ভাঙচুর করা হয়েছে। 
এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ-র‌্যালি করা হয়েছে। বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া গোলচত্বর এলাকায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন। ডেমরায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে প্রতিবাদী স্লোগান দিয়ে রাজপথে নেমে বিক্ষোভ করে। সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।

দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে প্রশাসনের উদ্যোগে সমাবেশ হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেয়। ফরিদপুরেও বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শাবিপ্রবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী’ ব্যানারে র‌্যালি ও সংহতি সমাবেশ হয়েছে। 
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ও প্রতিবাদ সভায় অংশ নেয়। পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিবিপ্রবি) সব পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত ঘোষণা করে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ইসরাইলি বর্বরোচিত হামলা এবং মানবতাবিরোধী গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আলিফ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীরা বইপত্র ও লেখাপড়া বন্ধ করে ফিলিস্তিনি শিশুসহ মুসলিমদের রক্ষায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে। বেলা দুইটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে হেফাজতে ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
নওগাঁ শহরের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ অন্তত ১০টি সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। রবিবার নাটোর লালপুরে শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। দুপুর থেকে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সর্বস্তরের জনতা। ঝালকাঠির শহরের ফায়ার সার্ভিস  মোড়ে পালিত হয়েছে জেনারেল স্ট্রাইক ও হরতাল কর্মসূচি। 
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেত্রকোনা পৌর শাখার উদ্যোগে জেলা সদরের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর চকবাজার জামে মসজিদের সামনে  জেলা জামায়াতের ব্যানারে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিচারিক কাজ শেষে আদালত প্রাঙ্গণে সমিতির অফিসের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে  জেলা আইনজীবী সমিতি।

ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভ করেছে তৌহিদী জনতা। ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। বর্ব্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজশাহী নগরজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ইসরাইলি সব পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একই কর্মসূচি পালন করেছে ক্যাম্পসের গোল চত্বরে। পটুয়াখালী সার্কিট হাউস চত্বরের ঝাউতলায় “গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা” কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক বিশাল মানবিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া কলাপাড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। কুড়িগ্রামের জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ জনতা। বেলা ১১টার দিকে পাবনা শহরের শহীদ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

পাবনা জেলা স্কুলসহ শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।  সাতক্ষীরা শহরের খুলনা  রোড এলাকায় গাজাবাসীর জন্য ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির আওতায় সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা। বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বর থেকে গাজায় যুদ্ধ বিরোধী চুক্তি ভঙ্গ করে ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা ও উপর্যুপরি বিমান হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরিশাল মহানগর শাখার আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সর্বস্তরের জনতা। রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এছাড়া টাঙ্গাইল,জামালপুর, ময়মনসিংহ, নওগাঁ, গাইবান্ধা, নীলফামারী, বান্দরবান, চুয়াডাঙ্গা, নরসিংদী, শরীয়তপুর, রংপুর, ফেনী, ঝিনাইদহ, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, নেত্রকোনার দুর্গাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভোলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের জনতা। এসব মিছিল থেকে ইসরাইলি পণ্য বয়কটেরও ডাক দিয়েছেন তারা।

×