
ছবি: সংগৃহীত
দখলদার ইসরায়েলী বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা, 'Stop Genocide in Gaza, From river to the sea Palestinian will be free' ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার গায়ে শিকল জড়িয়ে ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের প্রতীকী অবস্থা তুলে ধরেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, "তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা, মানবাধিকার-গণতন্ত্র নিয়ে জিকির করা বিশ্ব মোড়লদের প্রত্যক্ষ মদদে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম হত্যাকাণ্ড গাজায় সংগঠিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী পালিত গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজার অংশ হিসেবে আজকের এই সমাবেশ পালিত হচ্ছে। সারা পৃথিবীর ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার পক্ষের শক্তিরা ফিলিস্তিনের মজলুম ভাইদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এ কর্মসূচি পালন করছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ গাজাবাসীর জন্য করতে চাই।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, "গাজার অধিবাসীদের হত্যায় সভ্যতার সূতিকাগার ইউরোপ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আজকের এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে আমরা মনে করি অনেক হয়েছে। আর কোনো কথা নয়, এবার আমাদের একশানে যাওয়া উচিৎ। এই ইসরায়েলের দোসর আমেরিকার বিরুদ্ধে আমাদের নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত। আমেরিকান কোনো পণ্য বাংলাদেশে ঢুকবে না। বিশ্বের কোনো মুসলিম আমেরিকান পণ্য ব্যবহার করবে না, এই একটা বিষয়ে মুসলিম বিশ্ব এক হতে পারি তাহলে আমার বিশ্বাস রাতারাতি প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়ে যাবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের সেই ভ্রাতৃত্বে অনেক ঘাটতি রয়েছে। আবার সময় এসেছে, আমরা সবাই এক হই। এই রেজিমের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে এক হয়ে যুদ্ধ করতে হবে।"
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, "গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমাদের এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে আমরা এখানে দাঁড়ালেই ইসরায়েলি বাহিনী তাদের জঘন্য বর্বরতা বন্ধ করবে। আমরা যদি এই নিপীড়িত মানুষের জন্য কিছু করতে চাই তাহলে জ্ঞানের বিকল্প নেই। কারণ যাদের সাথে লড়াই তারা মানুষ হিসেবে কিন্তু জ্ঞান-গরিমায় অনেক বড়। তারা অনেক বেশি জানে এবং পারে। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের মতো জ্ঞানী না হতে পারবো এবং মানবতা সমুন্নত না রাখতে পারবো ততক্ষণ আমরা জিততে পারবো না।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার সংহতি সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন। এসময় সহস্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিকেল ৫টা পর্যন্ত সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
এ আগে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। এর আগে ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী 'Global Strike for Gaza'-এর অংশ হিসেবে 'নো স্কুল নো ওয়ার্ক' কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
আবীর