
ছবি: সংগৃহীত
বসন্তের বাতাসে ইরি-বোরো ধানের সবুজ ঢেউ কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। ঢেউয়ের মতো দোল খাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা ও কাঁচা শীষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ফসলের মাঠে বিলের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে বাতাসে ধানের সবুজ পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। দৃষ্টিজুড়ে ছেঁয়ে গেছে কৃষকের শ্রম আর কষ্টার্জিত স্বপ্নের পাতার সবুজ রঙের ঢেউ। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। মাঠজুড়ে কৃষকের জমিতে এখন হাঁটু সমান উঁচু ধান গাছ। আমন খেতের আগাছা পরিষ্কার এবং সার দেওয়া ও কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ধান গাছের পরিচর্যায় কেউ পরিষ্কার করছে আগাছা, আবার কেউ দিচ্ছে রাসায়নিক সার। কেউ কেউ প্রয়োগ করছে কীটনাশক। দম ফেলার সুযোগ নেই কৃষকদের। অধিক ফলনের আশায় কৃষকরা এবার স্থানীয় জাতের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল ধানের বীজ রোপণ করেছে। সারা মাঠ ছেঁয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের গুটি স্বর্ণা, সুমন স্বর্ণা, ব্রি-ধান-৪৯, ব্রি-ধান-৫১, ব্রি-ধান-৭৫, ব্রি-ধান-৮৭, ব্রি-ধান-৮৯, ব্রি-ধান-৯২ ব্রি-ধান-৯৫, ব্রি-ধান-১০৩ সহ বিভিন্ন জাতের ধানের সবুজ পাতার প্রান্তর। ধানের বাম্পার ফলনের আশায় দিন-প্রহর গুনছে এখন কৃষক। কৃষকের গোলায় সোনার ফসল ধান উঠলেই মায়া ভরা মুখে ফুটবে হাসির ঝিলিক।
এমনি কদিনের মধ্যেই শীষে দুধ-দানা গঠন শুরু হবে। আর এমন সবুজ সমুদ্রের ঢেউয়ে দুলে উঠছে প্রকৃতি। ইরি-বোরো ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। ধানের কাঁচা শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠে কৃষকের মন। দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বিকশিত করে তুলেছে।
অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। মাঠে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. নাসির উদ্দিন জানান, চলতি বছর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপজেলার কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কম জমিতে উন্নত জাতের বোরো ধান চাষ করে বেশি ফলন পেতে ব্যাপক সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ। উন্নত জাতের বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ উপজেলার কৃষকদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, "কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত ইরি-বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ধান কাটা শুরু হবে। কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারব। তখন পূরণ হবে কৃষকের স্বপ্ন।"
আবীর