
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। এমন প্রেক্ষাপটে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের দুই শিক্ষকের ভিন্নমত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিভাগীয় প্রধান আফতাব হোসাইন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, “আমার একটা বিষয় মাথায় ঢুকছে না। বুদ্ধিহীন হয়ে যাচ্ছি দিনে দিনে। কেউ একটু বুঝতে সাহায্য করেন। গাজায় হামলা হয়েছে, ছাত্ররা প্রতিবাদ স্বরূপ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে। এতে কার কী উপকার হবে?
আমরা মুসলিম জাতি সবসময় আন্দোলন আর গালাগালি না করে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারলে ভালো হতো না?
বিশ্ব দরবারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে তারপর দিতে হবে যথাযথ জবাব। করতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা আর ইনোভেটিভ কাজ। এই যেমন—ফেসবুকটাও তো ওদের তৈরি।
আমরা লেখাপড়া না করলে বিপক্ষের লাভটা কী?”
অন্যদিকে, একই বিভাগের শিক্ষিকা তাহমিনা রহমান বিভাগের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে লিখেছেন: “আগামীকাল যদি কেউ ক্লাস মিস দিয়ে স্ট্রাইকে যেতে চাও, যেতে পারো। আমি তাকে দুইটা অ্যাবসেন্ট দিয়ে দেব। সবাই না আসলে সবাই অ্যাবসেন্ট। আর এই টপিকে কেউ কাউন্সেলিং চাইতে আসবে না। তোমরা যদি বাজে এক্সকিউজ দেখাও, তাহলে এটি একটি সতর্কবার্তা।”
এই বক্তব্যগুলোর স্ক্রিনশট ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
তাহমিনা রহমানের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার গণমাধ্যমকে জানান, “এমন একটি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি পালন করবে, সেটি খুবই স্বাভাবিক। সেখানে অংশগ্রহণের কারণে ডাবল অ্যাবসেন্ট দেওয়া হবে—এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অনুচিত। কাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র ও সামাজিক সংগঠন ৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে কর্মবিরতি পালন করছে।
নুসরাত