
সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শিলিগুড়ি করিডোর, যা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত এই করিডোরটি নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ভারত।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চিকেনস নেক যেন কিছুতেই হাতছাড়া না হয় সেজন্য বিশেষ সামরিক ব্যবস্থা নিয়েছে দেশটি। সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ‘সেভেন সিস্টার্স’ খ্যাত সাতটি রাজ্য নিয়ে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে স্থলবেষ্টিত এবং বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের সমুদ্র প্রবেশাধিকারের অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপরই চিকেনস নেক নিয়ে আরও সতর্ক হয় ভারত।
চিকেনস নেকের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, শিলিগুড়ি করিডোর তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা লাইন। উন্নত সামরিক প্রস্তুতির মাধ্যমে যেকোনো সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলা করতে তারা প্রস্তুত। করিডোরের কাছে সুকনায় সদর দপ্তর অবস্থিত ত্রিশক্তি কর্পসের, যা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই কর্পস রাফায়েল যুদ্ধবিমান, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত।
ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য করিডোরটির নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের অবস্থানকে আরও জোরদার করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, চিকেনস নেক ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক অঞ্চল। সেখানে যেকোনো হুমকির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাহিনীকে দ্রুত মোতায়েন করা সম্ভব।
চিকেনস নেক ভারত কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে তা সেখানকার সামরিক উপস্থিতিতে স্পষ্ট। ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-
এই অঞ্চলে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপ-
উন্নত সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন: ভারতীয় বিমানবাহিনী মিগ বিমানের পাশাপাশি হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে রাফায়েল যুদ্ধবিমানের একটি স্কোয়াড্রন মোতায়েন করেছে।
ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্ট: সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধের জন্য করিডোরে ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি রেজিমেন্ট মোতায়েন করা হয়েছে।
ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা: যেকোনো আকাশ আক্রমণ রোধ করার জন্য ভারত এই অঞ্চলে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে।
আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: এগুলো অতিরিক্ত স্তরে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। যেকোনো অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে আকাশসীমা সুরক্ষা নিশ্চিত করে এই ব্যবস্থা।
নিয়মিত সামরিক মহড়া: তিন বাহিনীর সমন্বয়ে প্রায়শই যুদ্ধ মহড়া পরিচালনা করে ভারত। যার মধ্যে টি-৯০ ট্যাংকের সঙ্গে লাইভ-ফায়ার মহড়াও অন্তর্ভুক্ত। অপারেশনাল প্রস্তুতি বাড়ানোর জন্য এ ধরনের কাজ নিয়মিত চলে।
এদিকে ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘতম উপকূলরেখা ভারতের রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
ফুয়াদ