নেত্রকোনায় খামারির ফাঁদে ধরা পড়ল মেছোবাঘের বাচ্চা

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার পাচুড়া গ্রামের এক খামারির ফাঁদে একটি মেছোবাঘের বাচ্চা ধরা পড়েছে। শুক্রবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে বাচ্চাটি আটক করা হয়।  বাঘের বাচ্চাটির উচ্চতা প্রায় দুই ফুট, লম্বায় তিন ফুট। সারা গায়ে ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। মুখমণ্ডল অনেকটা বিড়ালের মতো, গায়ের রং ধূসর।

জানা গেছে, পাচুড়া গ্রামের শেখ জামালের খামারে গত দুইমাস ধরে প্রতিদিনই দুই-তিনটি করে হাঁস কমছিল। এ কারণে তিনি খামারের বেড়ার চারদিকে জাল দিয়ে রাখেন। কিন্তু এতেও কাজ হয়নি। নিরূপায় হয়ে সম্প্রতি তিনি লোহার ফাঁদ বানিয়ে আনেন। ফাঁদে একটি হাঁস রেখে রাতে খামারের পাশে পেতে রাখেন। শুক্রবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে ওই ফাঁদে একটি মেছো বাঘের বাচ্চা ধরা পড়ে। খবর পেয়ে সকাল থেকে উৎসুক লোকজন বাঘের বাচ্চাটি দেখতে ওই খামারির বাড়িতে এসে ভিড় জমায়। কলমাকান্দার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, হাঁসের খামারে মেছোবাঘের বাচ্চা আটকের খবর পেয়েছি। এটি অবমুক্ত করার জন্য বনবিভাগকে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর সংগঠন আইইউসিএন মেছো বাঘকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। জানা গেছে, মেছোবাঘ বিড়ালজাতীয় প্রাণী। দেখতে অনেকটা বাঘের মতো হওয়ায় মেছোবাঘ নামে পরিচিত। এগুলো হাওর, জলাশয় ও জলাভূমির আশপাশের ঝোপঝাড়, নির্জন কবরস্থানের ঝোপঝাড় ও বাঁশঝাড়ে আবাস গড়ে।  আবার কখনও ধানখেতে, সবজিখেতে, কখনও বাড়ির পরিত্যক্ত ঘরের কোণে আশ্রয় নেয়। জলাশয়ের মাছ শিকার করে খায়। ধানখেতের জন্য ক্ষতিকর ইঁদুর শিকার করে। ফসল বাঁচায়। কৃষকের উপকার করে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়, ঝোপঝাড় উজাড়, জনবসতির সম্প্রসারণের ফলে প্রাণীটির আবাসস্থল সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর সংগঠন আইইউসিএন মেছোবাঘকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।