ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১

সাতক্ষীরায় ভাঙন কবলিত নদীতীরে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন, লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ৪ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৮:৫৬, ৪ এপ্রিল ২০২৫

সাতক্ষীরায় ভাঙন কবলিত নদীতীরে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন, লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ

ছবি: সংগৃহীত

টানা ৫ দিন পর সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধের পাশে জিও টিউবের মাধ্যমে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ হয়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ভাঙন কবলিত মানুষের মাঝে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় বিকল্প রিংবাঁধের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় আজ শুক্রবার দুপুর থেকে পানি লোকালয়ে প্রবেশ বন্ধ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন।

গত বৃহষ্পতিবার (৩ এপ্রিল) শুরু হওয়া জিও টিউব দিয়ে এই বিকল্প রিংবাঁধ নির্মান কাজ শুরু হলেও শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরের পরে এই নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস। এছাড়া, পাউবো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, জিও টিউব ব্যাগের মধ্যে বালি ভরে বিকল্প রিংবাঁধ দিয়ে প্রাথমিকভাবে লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে মূল বাঁধ তৈরি করা হবে। 

বিছট গ্রামের বেড়িবাঁধ ভাঙনের ৪৮ ঘন্টা পর ভাঙন পয়েন্টে আধুনিক জিও টিউব দিয়ে একটি বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলে টানা তিন দিন। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক দফা জিও রোল বসিয়ে রিংবাঁধ দেয়ার চেষ্টা করা হলেও দুপুরে ফের জোয়ারে পানিতে এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর বৃহষ্পতিবার রাতে জোয়ারের পানি কমে যাওয়ায় আবার কাজ শুরু করা হয়। আজ শুক্রবার দুপুরে এই বিকল্প রিংবাধেঁর জন্য জিও রোল বসানো শেষ হয়।

বাধেঁর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় প্রকৌশলী জানান, আধুনিক পদ্ধতির জিও টিউব দিয়ে বাঁধের প্রাথমিক কাজ করে পানি ঢোকা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এখানে পানির উচ্চতা বেশি হওয়ায় প্রথম লেয়ারের কাজ শেষে দ্বিতীয় ও তৃতীয় লেয়ারের কাজ করতে হবে। পরে বাঁধের স্থায়িত্বের জন্য তার উপরে মাটির কাজ করতে হবে।

এর আগে বৃহষ্পতিবার পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মল্লিক সাঈদ মাহবুব, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ ফিরোজ সরকার, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমারসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আশাশুনির বিছট গ্রামের বেড়িবাঁধ ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। অপরদিকে আনুলিয়া ইউনিয়নের প্লাবিত এলাকায় নৌবাহিনী, বিভাগীয় কমিশনার, কোষ্ট গার্ড ও জামায়াতের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরি ত্রাণ বিতরণ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। শুক্রবারও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল ৯টার দিকে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রায় দুইশ’ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করেই খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে পানিতে প্লাবিত হয় আনুলিয়া ইউনিয়নের নয়াখালী, বিছট, বল্লবপুর, বাসুদেবপুর, আনুলিয়া, চেচুয়া, কাকবাশিয়া, মীর্জাপুর, চেউটিয়াসহ আশপাশের ১০টি গ্রাম। এর মধ্যে নয়াখালী গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়।

মিজানুর রহমান/রাকিব

×