ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল ভারতের ত্রিপুরা

মোঃ: সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া

প্রকাশিত: ১৭:১৪, ৪ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল ভারতের ত্রিপুরা

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশী পণ্যের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরসহ ৮টি বন্দর দিয়ে মাছসহ বছরে হাজার কোটি টাকার বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানী হয় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। বিশেষ করে মাছের চাহিদা অনেক বেশি। কোন কারণে বাংলাদেশ থেকে মাছ রপ্তানী বন্ধ থাকলে ত্রিপুরার মাছের বাজারে হাহাকার পড়ে যায়।

ত্রিপুরার দৈনিক দেশের কথা পত্রিকার খবর অনুযায়ী ২০২৪-২৫ ভারতীয় অর্থ বছরে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮৯৪ কোটি টাকার বাংলাদেশি পণ্য ত্রিপুরায় রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৩৭৬ কোটি ৯৫ লাখ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় ৫৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার মাছ বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের বাজারে যায়। একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে সব মিলিয়ে আমদানি হয় মাত্র ৭১ কোটি ৫২ লাখ টাকার পণ্য সামগ্রী।  

খবরে আরো বলা হয় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় রপ্তানিকৃত বিভিন্ন পণ্যের মূল্য ছিল ৬৩৬ কোটি ৭২ লাখ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় ৯০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ সালে ৭০৩ কোটি ৬৭ লাখ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক হাজার ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

আখাউড়া স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ত্রিপুরায় প্রতিদিন বাড়ছে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা। আখাউড়া, বিবির বাজার, বিলোনিয়া, বাল্লা, চাতলাপুরসহ ৮টি স্থলবন্দর দিয়ে মাছ ছাড়াও সিমেন্ট, এল পি জি, হালকা পানীয়, পিভিসি পাইপ, প্লাষ্টিক সামগ্রী ও পাম তেলসহ বিভিন্ন বাংলাদেশি পণ্য সামগ্রী যায় ত্রিপুরায়। ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে আসছে  জিরা, আদা, পেয়াজ, তেঁতুলসহ কিছু পণ্য সামগ্রী।

বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় রপ্তানী পণ্যের মধ্যে সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে মাছ। ২০২২-২৩ সালে ত্রিপুরার বাজারে বাজারে ২৬৭ কোটি ৩ লাখ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার মাছ যায় বাংলাদেশ থেকে। 

২০২৩-২৪ সালে ৩৩৪ কোটি ৩৩ লাখ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৭৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা ও ২০২৪-২৫ সালে ৩৭৬ কোটি ৯৫ লাখ রুপি যা বাংলাদেশি টাকায় ৫৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার মাছ বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের বাজারে যায়। 

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কর্মাসের ত্রিপুরা রাজ্যের সেক্রেটারি সুজিত রায় মোবাইল ফোনে জানায়, ত্রিপুরা রাজ্যে পর্যাপ্ত জলাশয় না থাকায় বাংলাদেশি মাছের চাহিদা বেশি। ভারতের অন্ধ প্রদেশ থেকে মাছ আসলেও চারদিন সময় লাগে কিন্তু বাংলাদেশি মাছ কয়েক ঘন্টার মধ্যে ত্রিপুরার বাজারে চলে আসে তাই বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় মাছ আমদানির পরিমাণ বাড়ছে। হাসিনা পতনের পরও এই বানিজ্যে প্রভাব পড়েনি।

আখাউড়া স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো: ফারুক মিয়া জানায়, বাংলাদেশি মাছের চাহিদা অনেক বেশি থাকায় অন্যান্য পণ্যের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি মাছ রপ্তানি হয় ভারতের ত্রিপুরায়। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাছ রপ্তানি হয় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। কোন কারণে মাছ রপ্তানি বন্ধ থাকলে ত্রিপুরার মাছের বাজারগুলোতে হাহাকার পড়ে যায় বলেও তিনি জানান।

আখাউড়া স্থলবন্দর সিএন্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি হাসিব হোসেন জানান, মাছ ছাড়াও অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বাড়ছে ত্রিপুরায়। সিমেন্ট, এল পি জি, পানীয়, পিভিসি পাইপসহ প্লাষ্টিকের নানা সামগ্রী এমনকি পরিশোধিত পাম তেলও দেদারছে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে রপ্তানি হয়। তিনি জানান, ত্রিপুরা থেকে যে পরিমাণ মালামাল বাংলাদেশে আমদানি হয় বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় তার দশগুণ বেশি পণ্য রপ্তানি হয়। 

আবীর

আরো পড়ুন  

×