ছবি: প্রতীকী
আজ ২ এপ্রিল, কেরানীগঞ্জে ভয়াল গণহত্যা দিবস। শহীদদের স্মরণে ঢাকার কেরানীগঞ্জের মনু ব্যাপারীর ঢালের স্মৃতিসৌধে প্রথমে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিনাত ফৌজিয়া। এসময় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে আরও শ্রদ্ধা জানান কেরানীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতিসহ সর্বস্তরের জনগণ।
বছর ঘুরে এ দিনটি ফিরে এলেই এলাকাবাসীর মধ্যে নামে শোকের ছায়া। ১৯৭১ সালের এই দিনে ভোরের দিকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী কেরানীগঞ্জের নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ হামলায় প্রায় ৫ সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু শহীদ হন। তাদের মধ্যে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৬০০ জন শহীদ হন, বাকি শহীদরা রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা ছিলেন।
১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট নামে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। প্রাণ বাঁচাতে বুড়িগঙ্গার ওপাড়ে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেয় অন্তত ২০ হাজার লোক। রাজধানী থেকে কেরানীগঞ্জে আশ্রয় নেওয়া লোকদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২ এপ্রিল ভোররাতে নির্বিচারে মেশিনগান ও কামান থেকে গুলি ছুড়তে থাকে। এছাড়া, পাকিস্তানি সেনারা বুড়িগঙ্গা নদীতে ২০ থেকে ২৫টি গানশিপ থেকে মর্টার শেল ছুড়তে থাকে কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর, মীরেরবাগ, কালিগঞ্জ, জিনজিরা, রবিশুর, নেকরোজবাগ, শুভাট্যা ও খোলামোড়া এলাকায়।
এলাকাবাসী জানায়, ফজরের নামাজ শেষ হতে না হতেই পাকিস্তানি হানাদাররা পাড়া-মহল্লায় ঢুকে নিরস্ত্র মানুষের ওপরে গুলি চালায়। ভোররাত থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা আক্রমণ চালিয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৫ হাজারেরও অধিক মানুষকে গুলি করে হত্যা করে।
জিনজিরার মনু ব্যাপারীর ঢালে একটি বাড়ির পাশে গর্তে প্রায় ৫০ জন লোক এবং অপর একটি গর্তে ৪৫ জন লোক আশ্রয় নিয়েছিল। পাক সেনারা এসব লোকজনদের ধরে এনে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। লাশের মধ্য থেকে যাদের পরিচয় পাওয়া যায়, তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর যাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি, তাদের এই মনু ব্যাপারীর ঢালে একটি গর্তে গণকবর দেয়া হয়।
রাকিব
