
"যদি আবারও সুযোগ পায়, এবার মাত্র ৩,০০০ এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং, দেড় হাজার- ২,০০০ গুম হয়েছে। আবার যদি সুযোগ পায়, এই সংখ্যা আরও অনেক গুণ হবে," – এমন মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে গুম ও খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, "এখনো হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। এবং ভারত খুবই দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই হাসিনা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে আশ্রয় দিচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা শুনতে পেয়েছি, কয়েক লাখের কাছাকাছি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা মনে করি, এটা বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের জন্য চরম হুমকি।
গত ১৫ বছর ধরে যে লড়াই চলছে, তাতে আমরা দেখেছি দেড় হাজার থেকে ২,০০০ মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ মানুষ এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন। জুলাই মাসে ২,০০০ এর কাছাকাছি শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন।"
তিনি বলেন, "আমাদের সবার অন্তত একটি বিষয়ে একমত হতে হবে,গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হবে। এখানে যাতে গুম, খুন, নিপীড়নের কোনো সংস্কৃতি আর ফিরে না আসে। হাসিনা ধ্বংস করে দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যদি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়, বিচার সম্পন্ন হয়, তবে গুম হওয়া মানুষদের আত্মত্যাগ মূল্যায়িত হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি সুশাসিত রাষ্ট্র পাবে, যেখানে তারা নিপীড়নের শিকার হবে না।"
তিনি বলেন, "আপনারা যারা ভিকটিম ফ্যামিলির সদস্য, শুধু আপনারাই নন-যারা এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন, যারা পিলখানা, শাপলা চত্বর, মোদি-বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত নির্যাতিত হয়েছেন,আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। কারণ, আপনাদের লড়াইটাই আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনা ও তার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে, দেশে-বিদেশে যারা তাকে সহযোগিতা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।"
তিনি বলেন, "আমি আপনাদের কথা শুনে খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি। কারণ, এই লড়াই আপনারাই করেছেন। মায়ের ডাকের ব্যানারে আপনারা মাঠে ছিলেন বলেই ১২-১৪ বছর পর এই লড়াই আমরা সফলতার দ্বারপ্রান্তে আনতে পেরেছি।"
তিনি আরও বলেন, "হাসিনার বিদায় হয়েছে, কিন্তু আপনাদের মাঠে থাকা এখনও জরুরি। যতদিন না গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, যতদিন না শেখ হাসিনার ফেরার পথ রুদ্ধ হচ্ছে এবং তার সহযোগীদের বিচারের প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে, ততদিন আমাদের বিশ্রামের সুযোগ নেই।"
"আমাদের অক্লান্তভাবে কাজ করে যেতে হবে, যাতে আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন করতে পারি এবং জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পারি।"
সূত্র: https://tinyurl.com/mtmdf8xp
আফরোজা