ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে মহাবিপদ!

প্রকাশিত: ০১:০৬, ৩১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০১:০৭, ৩১ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে মহাবিপদ!

গেল শুক্রবার দুপুরে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার। এর তীব্রতা এতটাই ছিল যার প্রভাব দেখা গেছে থাইল্যান্ড ও চীনেও।শুক্রবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি আফটার শকও অনুভূত হয়েছে মিয়ানমারে।প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পরে দ্বিতীয়টির মাত্রা ছিল ছয় দশমিক চার। এরপর শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত একাধিকবার মৃদু কম্পন অনুভব করা গিয়েছে বলে জানা গেছে।

মূল কেন্দ্রের ভূমিকম্পের তীব্রতা দেখে বুক কেঁপেছে বাংলাদেশেরও। আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে ২০২৩ সাল থেকে বাংলাদেশও এর আশেপাশের এলাকার ভূমিকম্পের আশঙ্কা বেড়ে গেছে।

তথ্য বলছে ২০২২ সালে বাংলাদেশও এর আশেপাশের অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছে ২৩টি। যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ৪১টি। পরিসংখ্যান থেকে আরো জানা যায়, ২০২৪ সালে ৫৪ টি এবং ২০২৫ সালে প্রথম তিন মাসে ৪২ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরি মধ্যে জমা হয়েছে ৮শ’-১ হাজার বছরের শক্তি। তার থেকেও বড় চিন্তার বিষয় গত ১০০ বছরে এ অঞ্চলে বড় কোন ভূমিকম্প হয়নি। যার ফলে বাংলাদেশে হতে পারে ৮.২ মাত্রা থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প। এমনটি হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহের অপরিকল্পিত অংশগুলো ধ্বংস্তস্তূপে পরিণত হতে পারে। জনবহুল এলাকায় তাৎক্ষনিকভাবে হতে পারে ২ থেকে ৩ লাখ প্রাণহানি।

অবরুদ্ধ হতে পারে আরো অন্তত ৫ লাখ বাসিন্দা।

বিশেজ্ঞরা বলছেন ‘ইন্ডিয়া প্লেট, বার্মা প্লেট সংযোগস্থল বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের ভেতরে ও আশপাশে বেশ কিছু সক্রিয় প্লেট রয়েছে।’

গত ৪০০ বছরে এখানে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। ১৮৭৮ সালে ৮ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর আগে ১৭৮৭ সালে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথের পরিবর্তন হয় ভূমিকম্পের ফলে। এর পর ১৭৬২ সালের ২ এপ্রিল বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয়। বে-অব বেঙ্গলে সুনামির সৃষ্টি হয় ও টেকনাফসহ ছোটখাটো দ্বীপ এলাকা তলিয়ে যায় এবং সেখানে কাদার উদগিরণ হয়। সে সময় পর্তুগিজ জাহাজের এক ক্যাপ্টেন স্বচক্ষে ওই দৃশ্য দেখেন। ১৭৬২ সালের আগে সেন্ট মার্টিনের অস্তিত্ব ছিল না, ১৭৬২ সালের ভূমিকম্পের ফলে সেন্ট মার্টিনের উদ্ভব হয়।’

ইন্ডিয়া আর বার্মা প্লেট আটকে আছে ৩০ কিলোমিটার গভীরে এবং গত এক হাজার বছরে এখানে কোনো বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়নি। তবে প্লেটের গতিপথ প্রতি ১০০ বছরে ১ দশমিক ৫ মিটার করে পরিবর্তন হয়েছে। তাহলে এক হাজার বছরে ১৫ মিটার চ্যুতি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভূমিকম্প হলে ৮-এর ওপরে ৯-এ চলে যেতে পারে। আর সেটার আংশিক প্রতিফলন আজ ভোরে দেখা দিয়েছে, যার মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮। আর এই ইন্ডিয়া-বার্মা প্লেটের আংশিক শক্তি আজ সামান্য রিলিজ করেছে। তবে এর বেশির ভাগ শক্তি রয়েছে ভেতরে, যা যেকোনো সময়ে উদগিরণ হতে পারে। আর এ কারণেই বাংলাদেশে আজ এই ভূমিকম্প দেখা দেয়। তবে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। আর বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা সিলেট অঞ্চল। ভবিষ্যতে দেশে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প যেকোনো সময় হতে পারে।’

ফুয়াদ

×