
ছবি: সংগৃহীত
কুয়াকাটা সৈকতের সমুদ্রপৃষ্ঠ ঘেঁষা ওয়াকিং জোন দখল করে তোলা স্থাপনা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সরদার মার্কেট নামে পরিচিত এই স্থাপনাটি ইতোপূর্বে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
এরই মধ্যে নতুন করে কাঠ আর টিনের স্ট্রাকচারের উপরে ইট সিমেন্টর ঢালাই দেওয়ার কাজ চলছে, করা হচ্ছে দোতলা। এখানে পর্যটকদের থাকাকে অনিরাপদ মনে করছেন সবাই। কিন্তু ফ্রি-স্টাইলে দীর্ঘদিন আগে সৈকত দখল করে এই স্থাপনা তোলায় পর্যটকসহ স্থানীয়রা হতবাক বনে গেছেন।
এই মার্কেটের নিচে প্রায় ৪০টি ছোট ছোট দোকানপাট রয়েছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই পর্যটকের আনাগোনা থাকছে। সৈকত দখল রোধে এবং ঝুঁকি এড়াতে এমন পরিবেশ বিনাশী কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি সচেতন মহলের।
কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পশ্চিম দিকে অন্তত ২০০ ফুট লম্বা এই মার্কেটটির স্থাপনায় সাগরের জোয়ারের পানি এসে ঝাপটা দেয়। বর্তমানে আরও সম্প্রসারিত করে সাগরের ওয়াটার লেভেল বরাবর সৈকতের বালু ব্যবহার করে নির্মাণ হচ্ছে মার্কেটটি। লোহার স্ট্রাকচারের উপরে টিন দিয়ে মূল ভিত্তি এই স্থাপনার। এর উপরে আবার জোড়াতালি দিয়ে দোতালার কাজ চলছে, দোতলায় করা হচ্ছে আবাসিক হোটেল। শুধু পর্যটক নয়, ওই মার্কেটের দোকানিরাও এতে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দোকানি জানান, বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের ঢেউ এসে প্রবল বেগে ঝাপটা দেয় এই মার্কেটের স্থাপনায়। তারপরও ভয়ে ভয়ে দোকান করেছেন। এখন এটিকে দোতলা করা হচ্ছে। যেকোনো সময় ধ্বসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। প্রবল অস্বাভাবিক জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। দোকানিরা দোকান হারানোর ভয়ে মালিকের এমন কর্মকাণ্ডের বিরোধিতাও করতে পারছেন না।
সমুদ্রপৃষ্ঠ ঘেঁষা এই সৈকতকে নিজের জমি দাবি করা হিরু মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, 'আমার জমির অনেকটা সাগরের মধ্যে রয়েছে। এ নিয়ে প্রশাসনের সাথে কয়েকবার বৈঠক হয়েছে।' আবারো বৈঠক হবে এবং এই স্থাপনা ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলেও মন্তব্য তার। তিনি জানান, প্রকৌশলীর পরামর্শ নিয়েই তিনি স্থাপনার কাজ করছেন।
কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেক জানান, সমুদ্র সৈকতের মালিক সরকার। এখানে ব্যক্তি মালিকানার কোনো সুযোগ নেই। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, কুয়াকাটা সৈকতে কোনো স্থাপনা তোলার সুযোগ নেই। ওই স্পটের জমির মালিকানা নিয়ে আদালতের একটি নির্দেশনা রয়েছে। তবে নতুন করে সম্প্রসারণ করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সৈকতে স্থাপনা তোলা বন্ধে প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলে তিনি জানান।
মেজবাহউদ্দিন মাননু/রাকিব