
ছবি: সংগৃহীত
খুলনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী পলাশসহ তার বাহিনীর ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনী। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন পলাশ শেখ (৩৮), নুরে আলম সিদ্দিকী লিয়ন শরীফ (২৯), রুবেল ইসলাম লাভলু ওরফে কালা লাভলু (৩৫), ইমরান হোসেন ওরফে ট্যাটু ইমরান (৩৫), সৈকত রহমান (২৭), ফজলে রাব্বি রাজন (৩৬), রিপন (৩০), গোলাম রব্বানী (২৬), ইমরানুজ্জামান (৩৩) ও শহিদুল (৩৫)।
গত শনিবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আজ রোববার (৩০ মার্চ) দুপুরে কেএমপি সদর দফতরে প্রেস ব্রিফিং করে এ এসব কথা বলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ জুলফিকার আলী হায়দার। প্রেস ব্রিফিংয়ে কেএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনে জানান, শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানোর জন্য সোনাডাঙ্গা থানার বানরগাতি আরামবাগ এলাকায় একটি নির্মাণাধীন একতলা ভবনে অবস্থান করছে।
গোপন সংবাদের প্রেক্ষিতে তারা সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ ও নৌ বাহিনীর সহায়তায় উক্ত বাড়িটি ঘেরাও করে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভবনের ছাদ থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বন করে এবং একইসাথে প্রতিরোধ করার জন্য সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে শটগানের গুলি ছোড়ে।
পাল্টাপাল্টি গুলাগুলির একপর্যায়ে ১০জন সন্ত্রাসীকে দেশীয় অস্ত্র, বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে ৩টি পিস্তল, পিস্তলের ৪ রাউন্ড গুলি, ১টি শটগান, শটগানের ২৩ রাউন্ড গুলি, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি চাপাতি, ১টি হাসুয়া, ২টি চাকু, ৪টি মোবাইল ফোন এবং ৭টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আরও জানান, থানার রেকর্ডপত্র যাচাই করে সন্ত্রাসী পলাশের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের ১৪টি (২টি হত্যা, ৩টি ডাকাতি, ১টি অস্ত্র, ২টি চাঁদাবাজি এবং অন্যান্য ৬টি) মামলা রয়েছে।
এছাড়া রুবেল ইসলাম লাভলু ওরফে কালা লাভলুর বিরুদ্ধে ১টি ডাকাতি, ১টি অস্ত্র, ১টি চাঁদাবাজি, ১টি পুলিশ এ্যাসাল্ট ও অন্যান্য ৩টিসহ ৬টি মামলা, আসামী নুরে আলম সিদ্দিকী লিয়ন শরীফের বিরুদ্ধে ২টি, মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে ট্যাটু ইমরারনর বিরুদ্ধে ১টি, ফজলে রাব্বি রাজনের বিরুদ্ধে ১টি, মোঃ রিপনে বিরুদ্ধে ১টি এবং মোঃ ইমরানুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, আনুমানিক ৩ ঘণ্টা ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধের সময় সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রায় ৮০/৯০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সন্ত্রাসীদের সাথে পাল্টাপাল্টি গোলাগুলির সময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ৭ জন পুলিশ সদস্য এবং ১ জন নৌ বাহিনীর সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও জানান, পুলিশ নিজেদের জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষার স্বার্থে এবং সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে শটগানের ৪৭ রাউন্ড গুলি ফায়ার করে। উদ্ধারকৃত ৭টি মোটরসাইকেলের মধ্যে ৫টির নাম্বার প্লেট আছে এবং ২টির নাম্বার প্লেট নাই। মোটরসাইকেলগুলোর মালিকানাসহ কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে।
রাকিব