
- ঈদ শপিংয়ে ক্রেতাদের ভিড়, বাড়তি দামের অভিযোগ
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর। ঈদ ঘিরে জমে উঠেছে কেনাকাটা। সাধ্যের মধ্যে পোশাক কিনতে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট, ফ্যাশন হাউস, জুয়েলারি দোকান, ফুটপাথসহ অন্যান্য প্রসাধনী দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। রাজধানীর পুরান ঢাকাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। তবে ক্রেতাদের মধ্যে পোশাকের দাম নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ কিছু কিছু পোশাকের দাম একটু বেশিই রাখছে দোকানীরা। আবার বিক্রেতাদের অভিযোগ গত কয়েকবছরে পোশাকের দাম অনেক বেড়েছে। ফলে ব্যবসায় কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।গত কয়েকদিনে সরেজমিনে পুরান ঢাকার বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেট ঘুরে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদ নিকটবর্তী হওয়ায় দিনকে দিন চাপ বেড়েই চলেছে। সাধ্যের মধ্যে নিজেদের পছন্দের পোশাকটি কিনতে বিক্রেতাদের সঙ্গে দামাদামি করতে দেখা যায় ক্রেতাদের। বেচাবিক্রির মাঝে বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করেন।
পুরান ঢাকার গ্রেট ওয়াল মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। পুরান ঢাকার বাসিন্দারা ঈদ উপলক্ষে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন দোকান ঘুরে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে ব্যস্ত। শাড়ি, থ্রি পিস, পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, জুতা, গহনা, কসমেটিকসসহ বাচ্চাদের পোশাকের দোকানে ছিল যথেষ্ট ভিড়। তবে শিশু ও মেয়েদের পোশাকের দোকানগুলোতে তুলনামূলক একটু বেশিই ভিড় দেখা যায়। গ্রেট ওয়াল মার্কেটের লেভেল-২-এর দোকানগুলোতে সাজানো রয়েছে বাচ্চাদের পোশাক। সঙ্গে আছে শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি। মানভেদে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। বড়দের শার্ট, টি-শার্ট ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গ্যাবাডিন, জিন্স প্যান্ট ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাপড়ের ওপর ভিত্তি করে পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হচ্ছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের পাঞ্জাবি ও শাড়ির প্রতি বেশি আকর্ষণ বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন মার্কেটের বিক্রেতারা। মেয়েদের পোশাকের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, দোকাগুলোতে শাড়ি ও থ্রি পিসের কাপড়ের রঙ ও মানভেদে থ্রি পিস ১ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা এবং শাড়ি ১ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ঈদ কেনাকাটায় পুরান ঢাকার ইসলামপুর, সদরঘাট, পাটুয়াটুলী, জাহাঙ্গীর টাওয়ার, ইসলাম টাওয়ার, লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, তাঁতীবাজার, কাঠেরপুল, ধুপখোলার মার্কেটগুলোতেও ছিল ক্রেতাদের ভিড়।
পুরান ঢাকার নগর সিদ্দিকী প্লাজা থেকে সিদ্দিকী স্টাইলের স্বত্ত্বাধিকারী কাইয়ুম বলেন, আগের থেকে এখন মোটামুটি বেচাকেনা ভালো। সামনের তিনদিনে আরও বাড়বে। আগের তুলনায় কিছু পোশাকের দাম বেশি। কিন্তু সব পোশাকের দাম বেশি না।
মেয়েদের যাবতীয় পোশাক বিক্রিতে বিখ্যাত পুরান ঢাকার গ্রেট ওয়াল মার্কেটের সিলভী বিতান। এ দোকান থেকে সানজানা ইসলাম বলেন, আমাদের এবার ব্যবসা নেই বললেই চলে। ব্যবসার এমন অবস্থার জন্য তিনি দায়ী করছেন অনলাইনে পোশাক বিক্রিকে। তিনি বলেন, হাতের নাগালে কোনো কিছু থাকলে মানুষজন কেনো মার্কেটে আসবে? আমাদের লসের পরিমাণ এত বেশি যে সামনে এ ব্যবসা চালানো কষ্ট হয় যাবে। এখন প্রত্যেকটা এলাকায় দোকান আছে। দোকান বেশি কিন্তু ক্রেতা কম। এসময়ে পুরান ঢাকার বিভিন্ন জুতার দোকান ঘুরে দেখা যায় যথেষ্ট ভিড়। কসমেটিক্সের দোকানগুলোতেও ছিল মোটামুটি ভিড়।
মেয়ের জন্য পোশাক কিনতে জিন্দাবাহার থেকে গ্রেট ওয়াল মার্কেটে এসেছেন শারমিন। ঘুরে ঘুরে কাপড় দেখছিলেন তিনি। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মেয়ের জন্য পোশাক কিনতে এসেছি। আমার মেয়ের গাউন পছন্দ। সে এবার ঈদে গাউন পরবে। সে অনুযায়ী এখানে আসা। কয়েকটি গাউন দেখেছি পছন্দও হয়েছে। তবে দামটা একটু বেশি। দাম বেশি হলেও মেয়ের ইচ্ছা পূরণ করতে চাই।
দু'বছর বয়সী ছেলের জন্য পোশাক দেখছিলেন সাজিদ-ইলমা দম্পতি। সাজিদ বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আর ইলমা গৃহীণী। তাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ছেলের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে এসেছি। এখানের পোশাকের মান ভালো। আর ভালো জিনিসের দাম একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে গত কয়েকবছরে কাপড়ের দাম অনেকটাই বেড়েছে। এটা কমা দরকার।
রাজু