ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

সংবাদ কর্মীর সহযোগিতায় হত্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আবিদুর রহমান নিপু, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ২০:৫০, ২৮ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২০:৫৩, ২৮ মার্চ ২০২৫

সংবাদ কর্মীর সহযোগিতায় হত্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সরোয়ার মুন্সি নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের নামে হত্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। 

অভিযোগ, সরোয়ার মুন্সি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে নিরীহ গ্রামবাসীকে। এ ঘটনার সাথে জড়িত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের আলোচিত প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর ঘনিষ্ঠ কথিত সংবাদ কর্মীরও বিচার দাবি করেন শত শত বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।

শুক্রবার বিকাল ৫ টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হিরালদী গ্রামের আঞ্চলিক সড়কে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। শতাধিক নারী-পুরুষসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যর এতে অংশগ্রহণ করেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে পাশ্ববর্তী সাউতিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মাতুব্বরের নিকট থেকে পেঁয়াজ বীজ ক্রয় করেন হিরালদী গ্রামের কতিপয় কৃষকেরা। ক্রয়কৃত পেঁয়াজ বীজ অঙ্কুরিত না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ চাওয়াকে কেন্দ্র করে গত ১২ ডিসেম্বর সকালে মোস্তফা মাতুব্বরের নেতৃত্বে কৃষকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় অন্ততপক্ষে ১০ জন কৃষক আহত হয়। সংঘটিত সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে সরোয়ার মুন্সী বাড়ি থেকে বেড়িয়ে দাঙ্গা দেখতে গিয়ে তিনি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে আসার কদিন পর মারা যায়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট মেম্বার কাজী জাফর উল্লাহর আস্থাভাজন স্থানীয় সংবাদ কর্মী সাইফুল্লাহ শামীমের প্ররোচনায় ২৩ জনকে আসামি করে ভাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয় বলে অভিযোগ মানববন্ধনে উপস্থিত নারী ও পুরুষের। 
স্থানীয় মিজানুর রহমান জানান, কৃষকদের ওপর অতর্কিত হামলাকে কেন্দ্র করে পাল্টা হামলা দেখার সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয় সরোয়ার মুন্সি। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে ওঠেন। গত বছর ২১ জুন বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বাভাবিক মৃত্যুকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেন সাউতিকান্দা গ্রামের মোস্তফা মাতুব্বর, সাংবাদিক সাইফুল্লাহ শামীম, আওলাদ মাতুব্বরসহ কয়েকজন। এ মামলায় নিরীহ মানুষদের অসৎ উদ্দেশ্যে আসামী করা হয়েছে একই গ্রামের ফরিদুজ্জামান লাবলু ও তার বৃদ্ধ বাবা হাজী আব্দুল সালামকে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান। 

মানববন্ধন অংশগ্রহণকারী ফরিদুজ্জামান লাবলুর স্ত্রী সম্পা বেগম বলেন, অসুস্থ শ্বশুর এবং আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমার শ্বশুর নিজে হাঁটতে পারে না, নিজের খাবার  নিজে খাইতেও পারে না। অথচ তিনি নাকি কোপ দিয়েছেন। আমরা এই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি চাই। ইন্ধনদাতা সাংবাদিকসহ জড়িতদের তিনি বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়টি নিয়ে জানতে বাদী আউলাদ মাতুব্বরের মুঠোফোনে কথা হলে সাংবাদিকদের বলেন, মৃত সরোয়ার মুন্সি তার দলের লোক বলে দাবি করেন। আসামিরা বাঁচার জন্য মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার ছড়াচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

দৈনিক কালবেলার স্থানীয় সংবাদ কর্মী সাইফুল্লাহ শামীম বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকায় কখনও কখনও সংবাদ কর্মীরা কারো রোষানলের শিকার হয়ে ওঠে। তেমনি শিকার হয়েছি উল্লেখ করে বলেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মিথ্যা ও কাল্পনিক।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, "হত্যা মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না। কারণ আমি কয়েকটি দিন হলো থানায় যোগদান করেছি বলে জানান। তবে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে পুলিশ।"

আবীর

×