ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে নতুন বিতর্ক ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

এই অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: ঢাবি চারুকলার ডিন

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০২:৪৫, ২৭ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৩:২৭, ২৭ মার্চ ২০২৫

এই অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: ঢাবি চারুকলার ডিন

ছবি: সংগৃহীত

ক্রমশ এগিয়ে আসছে নতুন বাংলা সন ১৪৩২। আর নববর্ষ আবাহনে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন নিয়ে হয়েছে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত। এই বিতর্কের সূত্রপাত চারুকলা অনুষদের ২০১৭-১৮ সেশন তথা ২৬তম ব্যাচের (চারুকলা ৭০তম) শিক্ষার্থীদের (প্রাক্তন) মাধ্যমে।

তারা অভিযোগ করেছেন, চারুকলার এবারের আয়োজনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত উপক্ষো করা হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনে আয়োজক কমিটি তাদের পছন্দসই শিক্ষার্থীদের বাছাই করছে।

এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শেখ আজহারুল ইসলাম চঞ্চল বলেন, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত।

চারুকলার ৭০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা না করে একটি নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষকগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততায় খুবই অতর্কিতভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের কাঠামো নিয়েও আমরা অবগত ছিলাম না এবং কারো ব্যক্তিগত মতার্দশে আঘাত দেওয়ার পক্ষেও না আমরা।

এমন কুরুচিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে নেওয়া হয়নি। চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তের সাথে ছিলো না। তাই এর জন্য তৈরি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দায় সমগ্র চারুকলার নয় বরং দায়িত্বে থাকা নির্দিষ্ট কতিপয় আয়োজক এবং ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ওপর বর্তায়।

তারা বলেন, 'এবারের বৈশাখ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বৈশাখ। এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের চাটুকারিতার্পূণ মনোভাবের কারণে আমরা শিক্ষকদের আয়োজনে বৈশাখের আনুষ্ঠানকিতা ও শোভাযাত্রা সর্মথন করছি না।' এবারের আয়োজক কমিটিকে ‘রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী’ আখ্যা দিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন বর্জনের ডাকও দিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে চারুকলার ডিন অধ্যাপক শেখ আজহারুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ সাল থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনে কোনো একটি ব্যাচকে দায়িত্ব দেওয়া হতো। তারা সবকিছু অর্গানাইজ করতো। তবে এতে কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা পাওয়া যায় না। কাজের মধ্যে সবকিছুর সমন্বয় কিংবা একাডেমিক জায়গাগুলো নিয়ে বিতর্ক ছিলো। শিক্ষকরা চাননি এবার তেমন কিছু হোক।

'তাই জ্যেষ্ঠ শিক্ষক, শিক্ষার্থী সবাইকে নিয়ে আমরা এবার বসেছি। এখানে চারুকলার বর্তমান ছাত্র, শিক্ষক, অ্যালামনাই সবাই যুক্ত হয়েছেন। আমরা চাইছি, সুশৃঙ্খলভাবে কাজটা করতে, যেখানে একটা স্বচ্ছ জবাবদিহিতা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও রাষ্ট্রীয় উৎসবের সে জায়গাটা ঠিক রাখার জন্য আমাদের এ সিদ্ধান্ত।'

অভিযোগকারী ৭০তম ব্যাচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা তো আমার অফিসে এসে কিছু বলে নাই। এখানে তাদের কোনো রাজনৈতিক মতার্দশ আছে কি না সেটা নিয়েও প্রশ্ন এসে যায়।

ডিন অধ্যাপক শেখ আজহারুল ইসলাম জানান, এবারের প্রতিপাদ্য ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। সেক্ষেত্রে কারো কারো মন খারাপ হতে পারে কি না এটা আপনারা (সাংবাদকিরা) বুঝতে পারবেন। এরকম কিছু থাকলে বলব, তারা একটা অস্থিরতার মধ্যে আছে। চারুকলার আয়োজনকে তারা বিতর্কিত করতে চায়।

মনোয়ার হোসেন/রাকিব

×