ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১

দেশীয় ফল লালমি’র বাম্পার ফলনে ফরিদপুরের কৃষকরা হাসছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ১৪:৩৭, ২৬ মার্চ ২০২৫

দেশীয় ফল লালমি’র বাম্পার ফলনে ফরিদপুরের কৃষকরা হাসছে

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে লালমি বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজান মাস থাকায় চাষিরা লালমির দামও পাচ্ছেন বেশ ভালো। বাম্পার ফলন আর ভালো দাম পেয়ে চাষিদের মুখে ফুটেছে খুশির হাসি।  জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত লালমি যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

জানা গেছে, লালমি বাঙ্গি জাতীয় সুস্বাদু দেশী রসালো ফল। দেখতে বাঙ্গির মতো হলেও স্বাদ গন্ধে রয়েছে ভিন্নতা। লালমিতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় রোজাদারদের কাছে ফলটি বেশ জনপ্রিয়। প্রতি বছর রমজান মাসকে সামনে রেখে ফরিদপুরের সদরপুরের চাষিরা লালমির চাষ করে থাকেন। চলতি মৌসুমে একশ লালমি প্রকারভেদে হাজার ৫০০ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দেখা যায়, চাষিরা ক্ষেত থেকে লালমি উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেত থেকে লালমি তুলে পাশেই ধোয়া হচ্ছে, এরপর ভ্যান বিভিন্ন গাড়িতে করে পাঠানো হচ্ছে হাটে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পাইকাররা লালমি কিনতে এসেছেন। ব্যাপারীরা এসে লালমি কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন। ফরমালিন মুক্ত হওয়ায় এখানকার লালমির চাহিদা দেশজুড়ে।
ছবি: সংগৃহীত

কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাগেছে, বছর ফরিদপুর জেলায় হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লালমি আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় জেলার সদরপুর উপজেলায়। বছর জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

সদরপুরের লালমি চাষি বারেক হাওলাদার বলেন, অন্য বারের চেয়ে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও বেশ ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। খরচ পুষিয়ে লাভ ভালোই হচ্ছে।

আরেক চাষি আবু সুফিয়ান বলেন, প্রতিবছর আমরা রমজান উপলক্ষে লালমি' চাষ করে থাকি। ফলটি রোপনের চার মাসের মধ্যেই বিক্রি করা যায়। তুলনামুলক খরচও কম। লাভও বেশি। গত কয়েক বছর দাম কম হলেও এবার ভালো দাম পাচ্ছি। আগামীতে এলাকার চাষিরা লালমি চাষে আগ্রহী হবে।

পাবনা থেকে আগত পাইকার ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, কয়েক বছর ধরে এই সময়ে এখান থেকে লালমি কিনতে আসি। প্রতি সপ্তাহে দুই দিন এখানে লালমি কিনতে আসি। আকার ভেদে একশ লালমি হাজার ৫০০ টাকা থেকে হাজার টাকায় কিনতে হয়। গাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ১০০ পিসে হাজার টাকা খরচ হয়। পরে প্রতিটি লালমি ১০ টাকা লাভে বিক্রি করি।

ছবি:সংগৃহীত

ঢাকা থেকে আগত ফয়সাল শেখ বলেন, প্রতিবছর এখানে এসে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে খেতে এসে লালমি কিনে থাকি। এখানে কোনো আড়ৎদার নেই। এখানকার লালমির স্বাদ ভালো, রাসায়নিক মুক্ত। যার কারনে এখানকার লালমি সারা দেশে বেশ চাহিদা রয়েছে।

বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে জেলার মানুষ লালমির চাষ করে। কম খরচ আর লাভজনক। এবার ফলনও হয়েছে ভালো। চাষিরা দামও পাচ্ছেন ভালো। সারা দেশে বেশ চাহিদা থাকায় লালমি দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

অভিজিৎ রায়/মেহেদী হাসান

×