
ছবি:সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন। ৩০ মিনিটের এই ভাষণে তিনি অর্থনীতি, বিনিয়োগ, দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা, শেখ হাসিনার বিচারসহ দেশের চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে তার অবস্থান তুলে ধরেন।
ড. ইউনূস বলেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদেরকে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ ও গণহত্যা চালিয়েছে, তা জাতিসংঘের প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে। বিশ্ববাসী জানে কী ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা তারা নিরস্ত্র মানুষের ওপর চালিয়েছে। লাশ লুকিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়ে তারা ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করেছিল। তাদের বিচার অবশ্যই বাংলার মাটিতেই হবে।"
তিনি বলেন, "৫ আগস্টের পর দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা পরাজিত শক্তিকে আতঙ্কিত করেছে। তারা এই ঐক্য ভাঙতে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া ছবি ও তথ্য দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু আমাদের সচেতনতা ও ঐক্য দিয়ে এসব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে হবে।"
প্রধান উপদেষ্টা জানান, "আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। তবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, গুজব ও অপপ্রচার বাড়বে। এগুলো রোধে জাতিসংঘের সহযোগিতা চেয়েছি।"
ড. ইউনূস তার সরকারের অগ্রাধিকার তুলে ধরে বলেন, "আমরা দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছি। তারুণ্য ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে। রমজান মাসে পণ্য সরবরাহে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, তা নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"
তিনি জুলাই চার্টার কমিশনের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, "রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্য তৈরি হচ্ছে। জুলাই চার্টারের মাধ্যমে একটি সমঝোতা দলিল প্রস্তুত করা হবে, যা নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি হয়ে উঠবে।"
শেষে তিনি জাতিকে পরাজিত শক্তির প্ররোচনা এড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং আল্লাহর কাছে দেশের শান্তি ও উন্নতির জন্য দোয়া করেন।
আঁখি