ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১

লালমনিরহাটে এসএসসি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ২৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২২:৪৩, ২৪ মার্চ ২০২৫

লালমনিরহাটে এসএসসি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

ছবিঃ সংগৃহীত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ থাকায় তা পুশিয়ে নিতে উপজেলা প্রশাসন একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চলতি ২০২৫ সালের এসএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ মডেল টেস্ট পরীক্ষা আয়োজন করা হয়েছে। এই পরিক্ষায় শিক্ষার্থীরা উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। এসএসসি পরীক্ষার আদলে শুরু হওয়া এই মডেল টেস্টে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বিশেষ মডেল টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়। আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল ৮টায় শাহ গরীবুল্লাহ মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮টি বিষয়ের উপর মডেল টেস্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি বিষয়ে ৩০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলায় ২০২৫ সালের এসএসসি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশেষ মডেল টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এতে উপজেলার ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। প্রথমবারের মতো হাতীবান্ধা উপজেলার দুইটি কেন্দ্রে, বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয় এবং শাহ গরীবুল্লাহ মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ৩০০ জন শিক্ষার্থী এই মডেল টেস্টে অংশগ্রহণ করছেন।

এই মডেল টেস্টে সেরা ২০ জনকে নির্বাচিত করে পুরস্কৃত করা হবে। পাশাপাশি, যারা এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে, তাদেরকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

শিক্ষার্থী মরিয়ম বলেন, "এই মডেল টেস্টের কথা শুনে আমাদের মাঝে আনন্দ ও উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। এর আগে আমরা কখনো বোর্ড পরীক্ষার পরিবেশ বুঝতে পারিনি। এখন বোর্ড প্রশ্নের মান ও কাঠামো সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। এই পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের ভয়ভীতি কেটে গেছে।"

বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল বারি বলেন, "এই মডেল টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন, তাদের পাবলিক পরীক্ষার ভয় দূর করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার এই উদ্যোগটি নিয়েছেন। তার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।"

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শামীম মিঞা বলেন, "আমরা হাতীবান্ধাকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষ্যে, আমরা প্রত্যেকটি স্কুলে বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য ছিলো যে, ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আন্দোলনের পর আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষার ঘাটতি ছিলো। সেই ঘাটতি পূরণ এবং এসএসসি পরীক্ষার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতির জন্য আমরা এই মডেল টেস্টের আয়োজন করেছি।"

তিনি আরও বলেন, "পৃথিবীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনভেস্টমেন্ট হলো শিক্ষা। শিক্ষা ক্ষেত্রে ১ টাকা ইনভেস্ট করলে ৪ টাকা রিটার্ন আসে। আমরা চাচ্ছি, শিক্ষা ক্ষেত্রে শ্রম, মেধা এবং অর্থ ব্যয় করতে। আগামীতে এসএসসি পরীক্ষা যেভাবে হবে, সেই পরিবেশে আমরা এই মডেল টেস্টের আয়োজন করেছি। যদি এটি চালু থাকে, তবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে হাতীবান্ধায় শিক্ষার্থীদের জাগরণ দেখতে পাবো।"
 

মারিয়া

×