
ছবি: সংগৃহীত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সত্ত্বেও অন্তত চারজন কূটনীতিক বিদেশে থেকে গেছেন, এবং কয়েকজন রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ বিদেশ থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা বিশ্লেষকদের মতে পেশাদারিত্বের বরখেলাপ।
বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সরকার ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকজন কূটনীতিককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশনে থাকা রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল ও রদবদলের উদ্যোগ নেয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রদূত, উপ-রাষ্ট্রদূত, কাউন্সিলর ও সচিব পদে নিযুক্ত প্রায় ২২ জন কূটনীতিককে নিজ নিজ মিশন থেকে ঢাকার সদরদপ্তরে ফিরতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, অন্তত ১৪ জন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কূটনীতিকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
তবে, সাত মাস পার হলেও নিয়ম অমান্য করে বেশ কয়েকজন কূটনীতিক দেশে ফেরেননি। এ তালিকায় রয়েছেন— সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম, কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কাউন্সিলর অর্পা রানী পাল, সাংবাদিক মিথিলা ফারজানা, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার শাবান মাহমুদ, কলকাতায় ডেপুটি মিশনের প্রথম সচিব আমিনুল পলাশ।
এছাড়া, একাধিক কূটনীতিক ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হারুন আল রশিদ গত বছরের ১১ ডিসেম্বর মরক্কো থেকে দেশে ফেরার এবং মন্ত্রণালয়ে যোগদানের নির্দেশনা পান। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে তিনি দেশে ফিরে আসার পরিবর্তে কানাডায় চলে গিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কূটনীতিকদের এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত বিস্ময়কর। রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রাধান্য দেওয়ায় পেশাদারিত্বের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।”
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইতোমধ্যেই হারুন আল রশিদ ও তার পরিবারের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। একইভাবে, রিয়াদে বাংলাদেশের দূতাবাসের কাউন্সিলর রাকিবুল্লাহ, জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যদের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=TgC4sZtiTyY
সায়মা ইসলাম