ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১

ব্যারিস্টার ফুয়াদ

আ’লীগ দুমুখো গোখরা সাপের মতো, যারা পুনর্বাসিত করতে চান তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ২৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১১:৪৬, ২৪ মার্চ ২০২৫

আ’লীগ দুমুখো গোখরা সাপের মতো, যারা পুনর্বাসিত করতে চান তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন

ছবিঃ সংগৃহীত

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ সম্প্রতি আওয়ামী লীগের পুনর্স্থাপন এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে একটি সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। ফুয়াদ ১৯৭৫ পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনাবলী উল্লেখ করেন, যেখানে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে কয়েকটি অংশে ভাগ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছিল, যার মধ্যে সজীব চৌধুরী এবং আব্দুস রাজ্জাকের মতো নেতারা বাকশাল পন্থী গোষ্ঠী নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ফুয়াদ ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা উল্লেখ করেন, যাকে ‘গুড’ আওয়ামী লীগ হিসেবে আনা হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন। তার মতে, ড. কামাল হোসেনকে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে আনা হয়েছিল, কারণ তিনি একটি ক্লিন ইমেজ ধারণকারী, আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত নেতা, যিনি দেশের জন্য লবিং করতে এবং বিদেশে ভালোভাবে যোগাযোগ রাখতে সক্ষম।

ফুয়াদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ একটি "দ্বিমুখী গোখরা সাপের মতো", যেখানে দলের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম এবং নেতৃত্বের মধ্যে এক ধরনের প্রতারণা এবং দ্বৈতনীতি বিদ্যমান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্স্থাপনা যে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, তা ইতিহাস থেকে স্পষ্ট। তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ হলো অভিশপ্ত রক্তধারার নাম, যারা যারা পুর্নবাসন করবেন তাদেরকে বলবো ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন"৷

ফুয়াদ জানান, প্রথমবার আওয়ামী লীগকে পুনর্স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৭৯ সালে বিএনপির সহায়তায়, যার নেতৃত্বে ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি জিয়াকে "দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি" হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন যে, জিয়া তার জীবনের মাশুল দিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্স্থাপন করেছিলেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এরশাদ ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগকে সংসদে ফিরিয়ে আনে, যার মাধ্যমে দলের বৈধতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। তবে, তিনি বলেন, এরশাদের সমর্থনও রাজনৈতিক জটিলতার অংশ ছিল এবং এটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছিল।জাতীয় পার্টির অবস্থা হইছে ৬ টুকরোর মতো, তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না, রাজনীতি নাই হয়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ফুয়াদ ১৯৯০-এর দশকে জামায়াত-ই-ইসলামী ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলির আন্দোলন এবং প্রতিবাদ উল্লেখ করেন, যেখানে আওয়ামী লীগ সফলভাবে বিরোধীদের রাজনৈতিক শক্তি নিঃশেষ করে দিয়েছিল। তবে, তিনি এই আন্দোলনের সময় যে সহিংসতা এবং রাজনৈতিক দমন-পীড়ন হয়েছে তা নিয়েও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "তৃতীয় বার পর্নবাসন করছে জামায়াত। ৯৪,৯৫,৯৬ তে একসাথে আন্দোলন করে বিএনপির বিরুদ্ধে ১৭৩ দিনের হরতাল, জ্বালাওপোড়াও সবই করেছে, সেই জামায়াতকে আওয়ামী লীগ নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে গত ১৬ বছরে। হাজার হাজার নেতা কর্মীকে গুম, খুন, হত্যা, নিপীড়ন, মিথ্যামামলাসহ এমন কিছু নাই যা জামায়াত শিবিরের ওপরে করে নাই"। 

শেষে, ফুয়াদ ২০০৭ সালের ১/১১ রাজনৈতিক সংকটের পর আওয়ামী লীগের পুনর্স্থাপনা নিয়ে কথা বলেন, যখন সামরিক সরকার, গণমাধ্যম, এবং সরকারি দালালদের সহায়তায় আওয়ামী লীগকে পুনর্স্থাপন করা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন যে, পুনর্বাসনের পর আওয়ামী লীগ গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরেছে, সিভিল ব্যুরোক্রেসি, মিলিটারি ব্যুরোক্রেসিকে নষ্ট করে দিয়েছে, রাষ্ট্রের প্রতিটা কাঠামো নষ্ট করে দিয়েছে।

ফুয়াদ শেষ দিকে বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে, এবং সতর্ক করেন যে, আওয়ামী লীগকে পুনর্স্থাপন করার চেষ্টা করলে পূর্বের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ও সামাজিক ক্ষতির পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
 

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/ExPaseHIeAA?si=S5shCs_SFjQMKgxa

মারিয়া

×