
ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুরে স্ত্রী ও চার বছরের শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার পর এক ব্যক্তি হারপিক খেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
রবিবার কাশিমপুরের গোবিন্দবাড়ী (দেওয়ান পাড়া) এলাকার রিপন মিয়ার ভাড়া বাসা থেকে নিহতদের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন- টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার সোলাপতিমা (বঙ্খী) গ্রামের আবুর ছেলে নাজমুল (২৭), তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার (১৯) এবং শিশু কন্যা নাদিয়া আক্তার (৪)।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরে বাবা রিপন মিয়ার বাসায় স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে থাকতেন নাদিয়া আক্তার। তিনি স্থানীয় সারদাগঞ্জ এলাকার রিচকটন পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। নাদিয়ার স্বামী নাজমুল মাদকাসক্ত ছিল এবং কোন কাজ কর্ম করত না। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা নিজ ঘরে শুয়ে পড়েন। সকাল হলেও তাদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে স্বজনেরা তাদের ডাকাডাকি করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা ঘরের পেছন দিকের জানালার ফাঁক দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় নাজমুলের লাশ ঝুলে থাকতে দেখেন। পরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন খাদিজা ও নাদিয়ার নিথর দেহ বিছানায় পড়ে আছে।
জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। এসময় নাজমুলের হাতের লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। ওই চিরকুটের লেখা থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শনিবার রাতের কোন এক সময় শ্বাসরোধ করে প্রথমে স্ত্রী নাদিয়াকে হত্যা করে নাজমুল। পরে মেয়েকে দেখাশোনা করে পালন করার কেউ না থাকায় শিশু সন্তানটিকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে সে। পরে নাজমুল প্রথমে নিজের শরীরে, হাতে এবং গলায় ব্লেড দিয়ে পোঁচিয়ে রক্তাক্ত করে।
পরবর্তীতে টয়লেটে ব্যবহারের হারপিক খেয়ে ঘরের আঁড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করে নাজমুল। পুলিশ নাজমুলকে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং তার স্ত্রী ও চার বছরের শিশু সন্তানকে বিছানা থেকে উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত তিনজনের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
মোস্তাফিজুর রহমান টিটু/মেহেদী হাসান