
ছবি: সংগৃহীত
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক জিল্লুর রহমান। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, "আপনারা দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। আমি বহুদিন ধরে বলে আসছি, আপনারা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। গৃহযুদ্ধ আপনাদের পছন্দ হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের পছন্দ নয়। আপনারা হয়তো অন্য কারও স্বার্থে কাজ করছেন। আমি দুঃখিত, কিন্তু সত্য বলতেই হবে।"
সেনাবাহিনী নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে জিল্লুর রহমান বলেন, "সেনাপ্রধানের সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। সেনাপ্রধান কখনোই বলেননি যে তারা ক্ষমতা নিতে চায়। তাহলে কেন এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে?"
তিনি আরও বলেন, "যেখানে বিএনপির মতো দলও বলছে তারা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করতে চায় না, সেখানে কিছু মহল কেন অযথা উত্তেজনা তৈরি করছে? জনগণের ক্ষমতায়ন যদি সত্যিই চান, তাহলে জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন—বিএনপি থাকবে কি থাকবে না, আওয়ামী লীগ থাকবে কি থাকবে না, তা জনগণই ঠিক করবে।"
জিল্লুর রহমান স্পষ্টভাবে বলেন, "আমাদের সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাঁ, ব্যক্তি বিশেষের ভুল থাকতে পারে, কিন্তু প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র, এটি কোনো ভঙ্গুর বা ব্যর্থ রাষ্ট্র নয়।"
তিনি অতীতের রাজনৈতিক ঘটনাগুলোর উদাহরণ টেনে বলেন, "১৯৯০ সালের অভ্যুত্থান যদি তৎকালীন সেনাপ্রধানের সমর্থন না পেত, তাহলে এরশাদের পতন সম্ভব হতো না। ১৯৭৫ সালের জুলাই-আগস্টেও সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আজ কিছু মহল সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়াতে চাইছে, যা দেশকে বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারে।"
সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ দাবি করেছেন, ১১ মার্চ ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে তাঁকে এবং আরও দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে নতুন রাজনৈতিক কৌশলের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাঁর অভিযোগ, এই প্রস্তাবের মূল বিষয় ছিল ‘পরিশোধিত আওয়ামী লীগ’কে নতুনভাবে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করা। তিনি এটিকে ‘ভারতের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সাজানো ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এই প্রসঙ্গে জিল্লুর রহমান প্রশ্ন তোলেন, "হাসনাত আব্দুল্লাহ কেন ১১ মার্চের ঘটনাটি ২১ মার্চ প্রকাশ করলেন? যদি তার বক্তব্য সত্য হয়, তাহলে এতদিন চুপ থাকার কারণ কী?"
জিল্লুর রহমান বলেন, ওয়াসা কেলেঙ্কারি, সচিবালয়ের দুর্নীতি, বরিশালে এনসিপি নেতাদের হেনস্তা— এসব ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে নতুন ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/k2ZJMCRKFMM?si=3XwLO4e_Jjp9t116
এম.কে.