
আর্মি যেহেতু পুরোপুরি আমাদের পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যাগুলো ডিল করে, সেখানে তাদের কথাটা রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অন্তবর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এক ভিডিও বার্তায় আসিফ বলেন, আমরা সবগুলো নামই প্রায় কেটে দিয়ে শুধু একটা নাম আমরা রেখেছিলাম। কারণ আমার কাছে মনে হচ্ছে ওইটা সেনসেটিভ জায়গা এবং দেশে এরকম একটা ট্রানজিশন টাইম সিচুয়েশনে। যেহেতু আর্মি পুরোপুরি আমাদের পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যাগুলো ডিল করে, সেখানে তাদের কথাটা রাখা উচিত। সেই জায়গা থেকে ওনার নামটা আমরা রাখি।
শুধু আর্মির প্রোপোজাল থেকে বাকিগুলো কেটে দেয়া হয়। এবং এছাড়াও আরেকটা যে ছয় তারিখে আর্মির সাথে আমাদের একটা বৈঠক হয়, তিন বাহিনী প্রধান, তারপর রাষ্ট্রপতি।
প্রায় চার ঘণ্টার একটা বৈঠক হয় যেটার মূল কথাটা ছিল যে, সেনাপ্রধানের দিক থেকে মূল ভেটো ছিল যে, ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস কেন, হোয়াই নট এনি আদার পারসন?
আমরা আমাদের অ্যাডামন ছিলাম, বিকজ আমরা তো পাঁচ তারিখ রাতেই ঘোষণা দিয়ে দিয়েছি যে, ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসউইল উইল বি দ্যা চীফ অ্যাডভাইজার অফ দ্য নেক্সট ইন্টার গভর্নমেন্ট।
এবং সেটা একধরনের বিপ্লবী কায়দায়, আমরা ভিডিও বার্তা দিয়ে ঘোষণা দিয়ে দিয়েছি। আমরা কোন নিয়মের কিংবা সংবিধানের তোয়াক্কা করি নাই সেই সময়টায় উল্লেখ করে আসিফ আরো বলেন, ওনি বারবার বলার চেষ্টা করছিলেন যে ড. ইউনূসের নামে মামলা আছে। তিনি একজন কমপ্লিকেটেড পারসন হলে কিভাবে একটা দেশের প্রধান উপদেষ্টা হতে পারে?
উপদেষ্টা ভিডিওতে আরো বলেন, আমরা তখন বললাম, আওয়ামী লীগের সময়ের পলিটিক্যালি মোটিভেটেড মামলা এই মামলাতেও পাওয়া যাবে, আমাদের নামেও আছে।
এটা বলার পর আবার ওনারা আরেকটা কথা বললেন যে, সোসাইটির একটা বড় অংশ তো ওনাকে হেট করে এবং বড় অংশ বলতে ওনি সরাসরিই বলেছেন যে আওয়ামী লীগের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটা তো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
এখন আওয়ামী লীগ তো ইউনুসকে দু'চক্ষে দেখতে পারে না, একদম অপছন্দ করে। এখন এই আওয়ামী লীগ একটা লোককে একেবারেই দেখতে পারছে না এবং বাংলাদেশের তো আলটিমেটলি থার্টি ফরটি পার্সেন্ট পিপল আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট করে। এই মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে একটা লোককে প্রধান উপদেষ্টা করা উচিত। আমরা তখন বললাম, আওয়ামী লীগ এমন কিছু না যেটা নিয়ে এখন আমাদের কনসার্ন হওয়া উচিত।
আওয়ামী লীগকে আমরা পরাজিত করেই এই প্ল্যাটফরমে আসছি উল্লেখ করে আসিফ আরো বলেন, এখানে আমরা বসছি, আওয়ামী লীগকে কি চাইল না চাইল এটা এখন আর ম্যাটার করে না। কিন্তু ওনি বারবার এই কথাটা ঘুরে ফিরে বলছিলেন যে, এই সরকার তো একটা নির্বাচন আয়োজন করবে। এজন্য বিএনপি, আওয়ামী লীগ সবার কাছে এই সরকারের গ্রহণযোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ ড. ইউনূসকে একেবারেই দেখতে পারে না।
ওনাকে আওয়ামী লীগ মেনে নিবে না, ওনি আসলে। আমাদের কথা ছিল যে আওয়ামী লীগ তো এখন এই মুহূর্তে ডিসিশন মেকিং এ আওয়ামী লীগ ম্যাটার করে না। এই ঘটনার পরে সে কি ভাবলো বা তার কি পজিশন ম্যাটার?
এরপরও ওনারা নানা ধরনের যুক্তি দিতে পারে এবং শেষ চার ঘণ্টা এই বিষয়ের উপরে ডিসকাশন হয়। আধাঘন্টা হয়তো অন্যান্য ইস্যু নিয়ে ডিসকাশন ছিল। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা এই ইস্যু নিয়ে ডিসকাশন ছিলাম আমি, নাহিদ ভাই, মাহফুজ ভাই আর নাসির ভাই। আর বাকি যারা ছিল তারা বাইরে অপেক্ষা করছিল। আসিফ স্যারও ছিল।
তারপরে তাজউদ্দিন স্যারও ছিল। আরও সমন্বয়কারী ছিলেন আরও দশ বারোজন। সবাই বাইরে অপেক্ষা করছিল। এই চার ঘণ্টা দুইবার বিরতি দিয়ে আমাদেরকে আবার ভাবতে বলে আবার চলে যেত। আবার এসে আবারও একই জায়গা থেকে কথা শুরু করত। বুঝতে পারছিলাম যে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসকে এখানে কোনোভাবেই চাচ্ছে না।
আমরা ঘোষণা দিয়ে দিচ্ছি এবং আমরা এক ধরনের হুমকির সুরে সেখানে বলি যে, যদি এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে না হয়, যদি রাষ্ট্রপতি ঘোষণা না দেয় ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তাহলেও আমাদের কিছু যায় আসে না। কারণ আমরা অলরেডি ঘোষণা দিয়ে দিয়েছি, আমরা আমাদের তৈরি করা উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ নিব।
হুমকি দেয়ার পরে তারা একটু নড়ে চড়ে বসে এবং তারা গিয়ে রাষ্ট্রপতির সাথে ডিসকাস করে আসে। এবং সেনাপ্রধান লাস্ট আমার মনে পড়ে আমাদেরকে বলেছিল যে আমি বুকে পাথর চাপা দিয়ে এই সিদ্ধান্তটা মেনে নিচ্ছি। এবং। জায়গাটা ছিল খুবই রিজিড যে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসকে এখানে একটা শক্ত সরকার গঠন করা পসিবল হবে না। এবং আর্মি যেই মোটিভেশন ছিল এটা এক এগারোর মতো একটা সরকার গঠন করার তাদের মোটিভেশন ছিল।
যখন তারা নামগুলো দেয়, ছয়টা সাতটা উপদেষ্টার নাম দেয়, তখন এটা বোঝা যায় এবং ডিক্টেটর করার এক ধরনের তামাশা। যদি এখানে অন্য কাউকে নেই, যার পার্সোনালিটি এত স্ট্রং না, তাহলে আলটিমেটলি আমরা আসলে অন্য কারও দ্বারাই পরিচালিত হব, ড্রিভেন হব। এই সরকারটা আত্মনির্ভরশীল একটা স্বতন্ত্র সরকার হতে পারবে না।
তারপর এ ঘোষণা দেয়, রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয় ডক্টর ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে। এবং তারিখ হচ্ছে পরবর্তী উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়। শপথ অনুষ্ঠানটা হয় স্যার যখন সার্জারি শেষ করে দেশে আসেন। তারপর ওইদিন সন্ধ্যায় সরকারটা গঠিত হয়।
ফুয়াদ