ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত 

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:২১, ২২ মার্চ ২০২৫

অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত 

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রয়াত সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকাল তিনটায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডিইউএমসিজেএ) এই স্মরণসভার আয়োজন করে।

স্মরণসভায় অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের সাথে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরেন তার বিভাগের (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা) বর্তমান, সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক থেকে শুরু করে ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এসময় অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের ছোট ভাই আতিক উল্লাহ সিদ্দিক, তার পরিবারের আত্নীয়-স্বজন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, তিনি অনেক মানুষের উপকার করেছেন। আবার অসংখ্য মানুষ তাকে কষ্ট দিয়েছেন। ওনার প্রাপ্তির কোন আশা ছিলো না, উনি শুধু দিয়ে গেছেন। আশা করি, তিনি পরকালে অনেক সুখেই আছেন।

সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরী বলেন, জানাজা নিয়ে যা যা ঘটলো এটা নিয়ে অনেকেই কান্না করেছেন। আমি ফেসবুকে পোস্ট দিলাম, কিন্তু অনেক মানুষ আমাকে ফোন করে দালাল বলছেন। আমরা স্যারের কাছে গিয়েছি ভালো কাজের জন্য। স্যার অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন।

ঢাবি শিক্ষক শারমিন আহমেদ বলেন, 'স্যারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত স্যারের জন্য তার শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা ছিলো। অনেকেই স্যারের সমালোচনা করেন অথচ অনেকেই স্যারকে দেখেননি। স্যারের শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ছিল। স্যারকে আল্লাহ বেহেস্ত নসিব করুন।'

ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কর্মকার বলেন, আমি অ্যালামনাইয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর স্যারের কাছে পরামর্শ নিতে গেলাম। তিনি বললেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনের জন্য আমরা আছি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের পাশে থাকেন যারা অর্থনীতির ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। আমরা স্যারের নেতৃত্বে সেই কাজটাই শুরু করেছিলাম। আমরা এই জায়গায় আসতে পারতাম না তাদের আশীর্বাদ ছাড়া। 

ঢাবি শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল হক বলেন, আমি বিভাগে স্যারের ছাত্র থেকে সহকর্মী হওয়ার সুযোগ হয়েছে। মোটামুটি জীবনের শুরু থেকে যা করেছি সব স্যারের মাধ্যমে। 

সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের স্যারের সাথে যা করেছে এটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য না। একদিন আমরা বটতলায় বড় পরিসরে আয়োজন করবো ইনশাআল্লাহ।

তাঁর ছোট ভাই আতিক উল্লাহ সিদ্দিক ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘গ্রামের ছেলেদের সাথে নিয়ে বড় ভাই পাখি ধরতেন। এরপর ঘুড়ি উড়াচ্ছে, আমরা দৌড়াচ্ছি। আমরা সিরাজগঞ্জ থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় আসতাম। আমি আর ভাই জানালা দিয়ে দৃশ্য দেখে দেখে ঢাকায় আসতাম। খুব গল্প করতাম আমরা।’

তিনি বলেন, বড় ভাই শত ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের পরিবারের সবার খোঁজখবর রাখতেন। উনি তিনটা-সাড়ে তিনটার আগে কখনো বিশ্রাম নিতে পারতেন না। সারারাত ফোন খোলা রাখতেন। আমাদের ফোন সাইলেন্ট থাকলেও উনি বলতেন, আমার লোকদের প্রয়োজন হতে পারে এজন্য ফোন সাইলেন্ট রাখি না।

আতিক উল্লাহ বলেন, উনি সারারাত নির্ঘুম থাকতেন। না ঘুমানোর কারণে খাওয়া-দাওয়া কমে গিয়েছিল। তার প্রতি আপনাদের ভালোবাসা দেখে আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। সবাই দোয়া করবেন।

সভাপতির বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুল হক বলেন, তার সাথে অনেক স্মৃতি জড়িত। তার সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো অনেক কাছের। কোনদিন তার রাগ অভিমান দেখিনি। আমাদের চোখে তার কোন খারাপ কিছু চোখে পড়েনি। আল্লাহ ওনাকে জান্নাতবাসী করবেন এই কামনা করি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল হাসান। উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাশরুর জামান।

আশিক

×