ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

রাতে একা পেয়ে শ্লীলতাহানি, লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা স্কুল ছাত্রীর

নিজস্ব সংবাদদাতা, হাতিয়া

প্রকাশিত: ২২:০৬, ২১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০১:০০, ২২ মার্চ ২০২৫

রাতে একা পেয়ে শ্লীলতাহানি, লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা স্কুল ছাত্রীর

প্রতীকী ছবি

বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় প্রায়ই উত্যক্ত করা হতো। সামাজিকভাবে বিচার চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অভিযুক্তরা, তৈরি হয় রোষানল। এর পর রাতে টয়লেট যেতে ঘরের বাইরে গেলেই পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্ঠা করে তারা। এতে লজ্জায়, অপমানে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রী।

মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালী জেলার হাতিয়ার চরকিং ইউনিয়নে।

এই ঘটনায় আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকালে ভুক্তভোগীর পিতা বাদী হয়ে হাতিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয় উপজেলার নলচিরা ইউনিয়নের দাসের হাট গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে মোঃ লাবলু, সাহাব উদ্দিনের ছেলে মোঃ হাসান ও মঞ্জু মাঝির ছেলে রুবেল উদ্দিনকে।

থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে ভুক্তভোগী ঘরের বাইরে গেলে তিনজনের একটি দল প্রথমে তাকে জাপটে ধরে। এরপর অভিযুক্তরা তাকে বাড়ির পাশের রাস্তায় রাখা অটোরিকশায় করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন ভুক্তভোগীর চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিবেশিরাও অভিযুক্ত তিনজনকে দেখে ফেলে।

এ ঘটনায় লজ্জায়, অপমানে রাতে ঘরে থাকা ইঁদুরের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ভুক্তভোগী। পরে তাকে উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এর আগে গত কয়েকদিন স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় পথে অভিযুক্ত তিনজন তাকে উত্যক্ত করে বলে অভিযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগী। বিষয়টি এলাকার লোকজনকে জানালে তখন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্তরা।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগীর পিতা জানান, তার মেয়েকে উত্যক্ত করার বিষয়ে সামাজিকভাবে কয়েকজনকে বলা হয়েছিল। তাতে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে রাতে তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যেতে চেয়েছে। তারা তিনজন এলাকায় অনেক অপকর্মের সাথে জড়িত। তিনি আরো জানান, তার মেয়ে এখন খুবই অসুস্থ। তিনি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, তিনি হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটিকে দেখে এসেছেন। মেয়েটি এখন মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন। অভিযুক্ত ছেলেগুলো এলাকার বখাটে। এছাড়া সার্বক্ষণিক ভুক্তভোগীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানান তিনি।

হাতিয়া থানার ওসি (তদন্ত) খোরশেদ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'ভুক্তভোগীর পিতা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। আমরা হাসপাতালে ভর্তি মেয়েটির সাথেও কথা বলেছি। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

কিরন/রাকিব

×