
ছবি: সংগৃহীত
বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী মসলিন শাড়ি পুনরায় তৈরি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে। দীর্ঘ নয় মাসের পরিশ্রমে পৌনে ২০০ বছর পূর্বের ঐতিহ্যবাহী এই শাড়ি তৈরি করেছেন তাঁতি আল-আমিন। দীর্ঘ সাধনার পর এ শাড়ি বানাতে সফল তিনি।
কথিত আছে, ব্রিটিশ আমলে মসলিন তাঁতিদের আঙ্গুল কেটে দেওয়ার ফলে বন্ধ হয়ে যায় এই ঐতিহ্যবাহী এই বয়নশিল্প। কিন্তু আল-আমিনের দীর্ঘ সাধনা যেন আবার ফিরিয়ে আনলো সেই হারানো ঐতিহ্য।
রূপগঞ্জের নোয়াপাড়ার তাঁতি আলামিন দীর্ঘ নয় মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের পর প্রথমবারের মতো মসলিন বুনতে সক্ষম হন। যদিও তিনি আগে জামদানি তৈরি করতেন। ২০১৩-১৪ সালে প্রথম মসলিন তৈরির চেষ্টায় নামেন তিনি।
তাঁর তৈরি শাড়ি বিভিন্ন দেশের ফ্যাশন শোতে প্রদর্শিত হয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আসলে এটা আল্লাহরই একটা রহমত। এটা আবার যে ফিরে আসবে, তা কেউ কল্পনাও করে নাই। আমি জামদানি কাজই করতাম। ২০১৪ সাল থেকে মসলিন শুরু করছি। প্রথমবার নয় মাস লেগেছিল, এরপর ধাপে ধাপে আরও আট-নয়টি মসলিন তৈরি করি, যেগুলো তুলনামূলক কম সময়ে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিটি শাড়িতে তাঁতি আল-আমিনের নাম ও তৈরির তারিখ দেওয়া থাকে। দাম সর্বনিম্ন ৪ লাখ টাকা, ৬ থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকাও বিক্রি হয় একেকটি শাড়ি। তাঁতি আল-আমিন জানান, মসলিন প্রায় শত বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু সাইফুল ইসলাম নামে এক গবেষক গবেষণা করে তাকে মসলিন তৈরিতে সাহায্য করেছেন।
মসলিন তৈরির জন্য প্রয়োজন সূক্ষ সুতা, যা অত্যন্ত সংবেদনশীল। সূর্যের তাপে এই সুতা ফেটে যেত। তাই রাতের বেলা ও ভোরের দিকে কাজ করতেন আল-আমিন। লন্ডন থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র আনলেও প্রথম পাঁচ মাসে কাঙ্ক্ষিত ফল পাননি তিনি।
তবুও দমে না গিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন এবং সফল হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বেসরকারিভাবে মসলিন তৈরি করছেন। তাঁর অধীনে আরও চারজন তাঁতি ৩০০ কাউন্টের সুতা দিয়ে কাজ করছেন। সর্বোচ্চ ৪০০ কাউন্ট পর্যন্ত সফলভাবে তৈরি করতে পেরেছেন তিনি।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=hMDhEmSz-3o
রাকিব