
বিএনপি চাইছে না আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ হউক, তাই সরকারও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেনি। কী করলেন দেশের জনগণের জন্য? উনি( ডক্টর ইউনূস) বিএনপি যা বলল তাই মেনে নিলেন, আর অন্যান্য পার্টিগুলো যা বলল, দেশের জনগণ যা বলল, রক্ত দিল তার কোন মূল্য নাই?”- এমন ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির ( এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, " বর্তমান অন্তবর্তী এই সরকার বিএনপি তুষ্টিবাদী সরকার। বিএনপি এখানে যা বলে এই সরকার তাই শোনে। দেশের মানুষের যে চাওয়া-প্রত্যাশা সেগুলো সরকার মূল্যায়ন করে হয় নাই। "
শিশির আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, "আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার থেকে বড় সংস্কার কি আছে বাংলাদেশে? এখন এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংস্কার তো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা।"
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা বেসরকারি টেলিভিশন যমুনায় এক টকশোতে এনসিপি জয়নাল আবেদীন শিশির দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর মতামত দিয়ে গিয়ে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন ।
বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানা বলেছিলেন বর্তমান ডক্টর ইউনূসের সরকার একটা "জনতুষ্টিবাদী সরকার"।প্রতি উত্তরে এনসিপি নেতা শিশির বলেন, “আমি তো মনে করি, এই সরকার জনতুষ্টিবাদী না, এই সরকার হচ্ছে বিএনপি তুষ্টিবাদী সরকার। বিএনপি এখানে যা বলে, এই সরকার তাই শোনে। দেশের মানুষের যে চাওয়া প্রত্যাশা, সেগুলো মূল্যায়ন করা হয়নি।”
শিশির আরও বলেন, “বিএনপি চাইছে না এই সরকার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে, দেশের জনগণ চাইছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক। বিএনপি চাইছে না রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে, বিএনপি চাইছে না জুলাই প্রোক্লেমেশন হোক, বিএনপি চাইছে না সেকেন্ড রিপাবলিক হোক। বিএনপি চাইছে না তাই এখন গণপরিষদ নির্বাচন দেয়া হচ্ছে না।”তিনি বলেন, “তাহলে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস এখানে কি আসলে জনগণের সরকার, নাকি বিএনপির তুষ্টিবাদী সরকার?”
“আপনাদের আহ্বায়ক তাহলে এতদিন সরকারে ছিলেন, তিনি বিএনপির তুষ্টির জন্য কাজ করেছেন?” উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে শিশির বলেন, “আমরা নিঃসন্দেহে বলবো, যারা এই সরকার আমাদের এই দাবিগুলো পূরণ করবে না, তারা জনগণের সাথে কোনো না কোনোভাবে প্রতারণা করেছেন। সে যেই হোক, ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস হলেও সেই প্রতারণা করেছেন।”
টকশোতে ফরহাদ মোজহার এর সাম্প্রতিক লিখা নিয়ে কথা উঠে। যেখানে তিনি বলেছেন, "রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে দূরদর্শী চিন্তা এবং কার্যকর কৌশলের অভাব রয়েছে। বাস্তব পরিস্থিতিতে সমাধান নির্ধারণের চেষ্টা না করায় আমরা দ্রুত চরম রাজনৈতিক বিপর্যয়ের দিকে ধেয়ে চলেছি। যদি আমরা সতর্ক না হই, দ্রুত একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করব এবং বাংলাদেশ ইন্দোমার্কিন-ইসরাইলি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হবে, যার ফলে বাংলাদেশ নতুন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হবে।"
তার এই আশঙ্কার পেছনে এনসিপি যুগ্ম সদস্য সচিব কি কি যুক্তি খুঁজে পান বা আদৌ কোন যুক্তি খুঁজে পান কিনা? এমন প্রশ্নে শিশির জানান,“হ্যাঁ, ফরহাদ ভাই যে জিনিসটা আজকে উত্থাপন করেছেন এ ধরনের আশঙ্কা আমাদেরও রয়েছে ।”
শিশির জানান, “ বাংলাদেশকে নিয়ে বহির্বিশ্বের এবং আঞ্চলিক পরাশক্তির সবসময় একটি গভীর ষড়যন্ত্র বিদ্যমান।আমরা ৫৪ বছর ধরে এই রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করছি।”তিনি আরও বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষেরা প্রায় ৫০০ বছর ধরে বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে।”
এনসিপি নিবন্ধনের বিষয়ে শিশির বলেন, “ইসির যে নিবন্ধন প্রথা ছিল, তা ফ্যাসিস্ট সরকারের কালো আইন। আমরা চাই এর বাতিল করা হোক।”তিনি আরও যোগ করেন, “প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে, সে জনপ্রতিনিধি হতে পারবে, দল গঠন করতে পারবে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে।”
সূত্র:https://tinyurl.com/2p9ef2b8
আফরোজা